দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনপরবর্তী ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন কেন্দ্র করে সহিংসতা হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। মাগুরার শ্রীপুরে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে দুই পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হন। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে পালটাপালটি হামলা ও ভাঙচুরের চারটি ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৭ জন। নাটোরে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর এক সমর্থককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মারধর করেছে অপর পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা। মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে এক প্রার্থীর নির্বাচনি ক্যাম্পে হামলা করে তার এক সমর্থককে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। মানিকগঞ্জের শিবালয়ে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর ও এক সমর্থককে লক্ষ্য করে গুলির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- নাটোর : পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর সদর উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম মাসুমের কর্মী হিসাবে কাজ করেন শহরের তালতলা হাফরাস্তা এলাকার আলম গাজীর ছেলে মো. রুবেল (৩০)। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় অপর পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হোসেন মিলন ও তার সমর্থকরা রুবেলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। মিলনের চেম্বারে নিয়ে তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। তার হাত, পা ও মাথায় গুরুতর জখম করা হয়। ছেলেকে বাঁচাতে নাটোরের গোয়েন্দা পুলিশে খবর দেন আলম গাজী। খবর পেয়ে পুলিশ মিলনের চেম্বার থেকে রুবেলকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। নাটোর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ জামিল হোসেন মিলন ও তার গাড়িচালককে গ্রেফতার করেছে। পরে তাদের আদালতে তোলা হলে তারা জামিন পান। নোয়াখালী ও সুবর্ণচর (নোয়াখালী) : নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মুন্সিরহাট, চরজব্বার ইউনিয়নের চেউয়াখালী ও চর হাসান ভূঁইয়ার হাট বাজার, পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নে হামলা-পালটাহামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন-আনারস প্রতীকের চরক্লার্ক ইউনিয়নের বাকের, পূর্বচরবাটার হোরণ, স্বপ্না, চরবাটার ফারুকউল্যাহ, শুভ, আলমগীর, চরজব্বরের ছেরাজ, হাসেম ও রিয়াজ ভূঞা। দোয়াত কলম প্রতীকের পূর্বচরবাটার হেদায়েত, আকবর, মোহাম্মপুরের শামসুদ্দিন, চরজব্বরের মো. এমরান, মো. আশরাফ ও ছালাহ উদ্দিন। হামলার সময় ১৬টি দোকান ও একটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। মাগুরা : শ্রীপুরে বিজয়ী চেয়ারম্যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শরীয়াত উল্লাহ হোসেন রাজনের কর্মীসমর্থকদের সঙ্গে পরাজিত আওয়ামী লীগ নেতা মুতাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম ও মাহমুদুল্লাহ গণি শাহিনের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে দুপক্ষের কর্মীসমর্থকরা ছাবিনগর স্কুলের সামনে লাঠিসোঁটা, রামদা, সড়কি, বল্লম নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে জাহিদ, এরশাদ, জান্নু, আবেদ আলী, নাছির, জিললু, মাহাবুল, আনোয়ার, অনিক, ঠান্ডু, রোকনুজ্জামান, আশরাফ, জাহাঙ্গীর, দেলবার মন্ডল ও সিরাজকে মাগুরা ২৫০ শয্যা এবং শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে। লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) : বেজগাঁও ইউনিয়নের ছত্রিশ গ্রামে শুক্রবার বিকাল সোয়া ৫টায় চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএম শোয়েবের নির্বাচনি ক্যাম্পে হামলা করেছে প্রতিপক্ষ রশিদ শিকদারের সমর্থরা। এসময় শোয়েবের কর্মী রকি শেখকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রকির বাবা বিল্লাল শেখ বাদী হয়ে লৌহজং থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। মানিকগঞ্জ : শিবালয়ে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর ও তার এক সমর্থককে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর রহিম খানের অনুসারীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রায় ৩ ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জয় ঘোষ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, তাকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে।