‘ভোটের প্রতি মানুষের আস্থা নেই, বিশ্বাস উঠে গেছে। সারা দিন দুই-তিনটা ভোট পড়ছে। বিকালে তা বানানো হচ্ছে ৩শ থেকে ৩ হাজার। এ কারণে ভোটের ওপর মানুষের আস্থা নেই।’ ঠাকুরগাঁওয়ে ‘উপজেলা নির্বাচনী প্রচারণা সভায়’ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলাম খোকন এসব মন্তব্য করেন। তার এ বিস্ফোরক মন্তব্য টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণা সভায় কামরুল ইসলাম খোকন আরও বলেন, ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা আসেন না। হাত ধরে টেনে আনলেও আসতে চায় না। কেন্দ্রে সারাদিন সাংবাদিক-গণমাধ্যমকর্মীরা, রাজনীতির দলের নেতা, বিভিন্ন প্রার্থীর পোলিং এজেন্টরা থাকছেন। তারাই দেখছেন সারাদিন ধরে একটি কেন্দ্রে ভোট পড়ছে ৩শ। আর বিকাল হলে বানানো হচ্ছে ৩ হাজার। তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি, এজন্য আমরাই দায়ী। হামরা (আমরা) এমনভাবে রাজনীতি করছি যে, এখানে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ থাকবে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ থাকবে, বিএনপিসহ সব দল থাকবে। স্বাধীনতার ৫২ বছরে এ দেশে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। কামরুল বলেন, রাজনীতিবিদরা রাজনীতিকে নষ্ট করে এটাকে ব্যবসায় পরিণত করছে। চালাকি, ধান্ধাবাজি আর চালবাজি করে আমরা ভোটটা করছি। এই তানে (এ কারণে) মানুষের ভোটের প্রতি আস্থা নেই। ভোট দিতে মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায় না। ঠাকুরগাঁওয়ে একজন মন্দিরভিত্তিক রাজনীতি করছেন; আরেকজন মসজিদভিত্তিক। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান খোকনের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সানোয়ার পারভেজ পুলক মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের আইন-বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইন্দ্রনাথ রায় বলেন, আমরা তার লাগাম টেনে ধরতে পারি না। তবে তিনি বলেন, এখানে মন্দিরভিত্তিক রাজনীতি ও মসজিদভিত্তিক রাজনীতি শুরু হয়েছে ভোটকে কেন্দ্র করে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান খোকনের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া মেলেনি। ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা। এই উপজেলায় আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন।