জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে হাইপারসনিক অস্ত্র-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে যাচ্ছে। বুধবার এ বিষয়ে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে মিত্র দেশ দুটি। হাইপারসনিক অস্ত্রের ক্রমবর্ধমান হুমকির বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য এই চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে তারা। এই ধরনের অস্ত্র বর্তমানে চীন ও রাশিয়ার দখলে রয়েছে এবং উত্তর কোরিয়া সেগুলোর পরীক্ষা চালাচ্ছে। খবর রয়টার্সের। গত আগস্টে এক শীর্ষ সম্মেলনে এই প্রকল্পের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সম্মতি প্রকাশ করেছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপর এপ্রিলে কিশিদার ওয়াশিংটন সফরের সময় চুক্তির বিষয়টি আবারও নিশ্চিত করা হয়। ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ‘গ্লাইড স্ফিয়ার ইন্টারসেপ্টর’ নামের এই হাইপারসনিক অস্ত্র-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রথম ও বড় পদক্ষেপই হবে দায়িত্ব ভাগ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা। এছাড়া এই ধাপে জাপানি ঠিকাদারদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। হাইপারসনিক অস্ত্রগুলো ম্যাক ৫ বা শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতিতে অতিক্রম করতে সক্ষম হবে। এই ধরনের গতি আঞ্চলিক ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। তবে এ ধরনের সিস্টেমের জন্য ইন্টারসেপ্টর তৈরি করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’ বলে অভিহিত করে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই অঞ্চলে হাইপারসনিক অস্ত্রের নাটকীয় উন্নয়ন হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, ইন্টারসেপ্টরের প্রাথমিক বিকাশ এবং পরীক্ষার জন্য জাপান ৪৯ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে। এই খরচের মধ্যে রেথিয়ন টেকনোলজিস এবং নর্থরপ গ্রুমম্যানের জন্য উপাদান তৈরির খরচও অন্তর্ভুক্ত। কোম্পানি দুটি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সংস্থার নেতৃত্বে প্রতিযোগিতামূলক অস্ত্র তৈরি করছে। এই প্রকল্পের জন্য এই দুইটি কোম্পানির যে কোনও একটিকে বেছে নেওয়া হবে। এমডিএ অনুমান করছে, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ইন্টারসেপ্টর তৈরিতে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি খরচ হবে। এর মধ্যে জাপানের ১০০ কোটি ডলারের শেয়ার রয়েছে। ইন্টারসেপ্টরগুলো ‘শিপ-টু এয়ার স্ট্যান্ডার্ড মিসাইল-৩’ এর মতো এজিস-ক্লাস ডেসট্রয়ারগুলোতে মোতায়েন করা হবে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে মিলে তৈরি করেছিল জাপান। ক্রমবর্ধমান হুমকির বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে জাপান। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যৌথভাবে তৈরি করা প্রাণঘাতী অস্ত্রের অনুমতি দিতে দেশটির অস্ত্র রফতানি নীতিতেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে।