‘রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লি:র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লি:’ থেকে কাগুজে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৪০ কোটি টাকা ঋণ। গ্রহণ, সেখান থেকে ২৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে দেয়া হচ্ছে এ চার্জশিট। আজ ( সোমবার) চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। যে কোনো দিন এটি আদালতে দাখিল হবে। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, প্রশান্ত কুমার হালদার, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস’র পরিচালক বাসুদেব ব্যানার্জি, মেরিন ট্রাস্ট’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: নওশেরুল ইসলাম, ফাস ফাইন্যান্সের পরিচালক কাজী মাহজাবিন মমতাজ, একই প্রতিষ্ঠানের ভাইস চেয়ারম্যান মো: জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক মো: আবুল শাহজাহান, পরিচালক ডা: উদ্দাব মল্লিক, প্রদীপ কুমার নন্দী, অঞ্জন কুমার রায়, অরুন কুমার কুন্ডু, মো: মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জ্বল কুমার নন্দী, ফাস ফাইন্যান্সের প্রধান নির্বাহী মো: রাসেল শাহরিয়ার, প্রিন্সিপাল অফিসার তানভির আহমেদ কমল, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গীর আলম ভুইয়া ও সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রাণ গৌরাঙ্গ দে। তবে এজাহারভুক্ত আসামি এস.এ.এন্টারপ্রাইজের মালিক মো: শাহ আলম শেখ মামলার তদন্তাবস্থায় ইন্তেকাল করায় তাকে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এজাহারভুক্ত ১৪ আসামির মধ্যে ১৩ জন এবং তদন্তকালে আগত নতুন ৩ জনকে চার্জশিটে আসামি করা হয়। তদন্তে আগত আসামিরা হলেন, তানভির আহমেদ কমল, জাহাঙ্গীর আলম ভুইয়া এবং প্রাণ গৌরাঙ্গ দে। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, আসামিগণ পরষ্পর যোগসাজশে, অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ‘ মেরিনট্রাস্ট লিমিটেড’র অনুকূলে ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লি: থেকে ৪০ কোটি ১৯ লাখ টাকা ঋণ মঞ্জুর করান। উত্তোলনকৃত ঋণের মধ্যে তারা মাত্র ১২ কোটি ৭২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট ২৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। আত্মসাৎকৃত টাকা পরবর্তীতে লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেন। যা ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৪০৯,৪২০,১০৯ ও ১৯৪৭ সালের ২ নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন,২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর আগে ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করেন সহকারি পরিচালক মো: রাকিবুল হায়াত। মামলাটি তদন্ত করেন উপ-পরিচালক মো: ইসমাইল হোসাইন। প্রসঙ্গত: এ মামলার প্রধান আসামি পিকে হালদার গ্রেফতার হয়ে এখন ভারতের কারাগারে রয়েছেন। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আসামি হচ্ছেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস’র পরিচালক বাসুদেব ব্যানার্জি। ১০৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অন্তত; ১৫টি মামলায় পিকে হালদারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আসামি হিসেবে রয়েছেণ বাসুদেব ব্যানার্জী ও তার স্ত্রী পাপিয়া ব্যানার্জী। ওই মামলায় সম্প্রতি চার্জশিট দেয়া হয়। কিন্তু এ মামলায় তাদের দু’জনকে জামিন দিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ৯ মে বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ এ জামিন দেন।