ডলারের দাম ও ঋণের সুদহার ইতোমধ্যেই বেড়েছে; বাজারভিত্তিক করার কারণে আগামী দিনে তা আরও বাড়বে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে আমদানি ব্যয়সহ অন্যান্য খরচ। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। কয়েক বছর ধরেই ভোক্তা ও উদ্যোক্তারা নানা সংকটে রয়েছেন। এদিকে অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে পণ্যের চাহিদা কমছে। উৎপাদনে এর প্রভাব পড়বে। উৎপাদন কমে গেলে কর্মসংস্থানে এর প্রভাব পড়বে। বৈশ্বিক কারণে এবং দেশীয় অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে আড়াই বছরে ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১১৮ টাকা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমদানির সময় চাহিদা অনুযায়ী ডলার মিলছে না। ডলার সংকটে আমদানি খরচ বাড়ছে। সম্প্রতি পণ্যের উৎপাদন খরচ আগের তুলনায় বেড়েছে। এর চাপ পড়ছে ভোক্তার ওপর। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দামে যে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু করেছে, তা সাময়িক। এ পদ্ধতি বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার পর ডলারের দামকে পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করা হবে। বিশ্লেষকদের মতে, ক্রলিং পেগ থেকে বাজারভিত্তিক করা হলে ডলারের দাম আরও বাড়বে। এর প্রভাবে আগামী দিনে পণ্যের দাম আরও বাড়লে এ চাপ ভোক্তারা কতটা সহ্য করতে পারবেন? ডলারের দাম ওঠানামা করবে, এটি স্বাভাবিক এক প্রক্রিয়া। এ নিয়ে কেউ গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করে কি না, কর্তৃপক্ষের উচিত সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া। ডলার সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত। কাজেই এ সমস্যার সমাধানে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যাংক খাতের সমস্যাগুলোও বহুল আলোচিত। যেসব ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে, তারা সংকট মেটাতে চড়া সুদে আমানত নেওয়ার এবং ঋণের সুদ বাড়ানোর চেষ্টা করবে। বিশেষ করে ভোক্তা ঋণের সুদ বেশি বাড়ানোর চেষ্টা করা হতে পারে। আশঙ্কা, এ হার ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর প্রতি এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা রয়েছে। সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে গভর্নর বলেছেন, নতুন ব্যবস্থায় ঋণের সুদহার ১৪ শতাংশের মধ্যে সীমিত থাকবে। দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, ব্যাংকগুলো বেশি হারে সুদ আরোপের পাশাপাশি পদে পদে সার্ভিস চার্জ আরোপের মাধ্যমে আগ্রাসী আচরণও করে থাকে। কর্তৃপক্ষের উচিত এদিকেও দৃষ্টি দেওয়া। অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে নতুন বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হচ্ছেন না। কাজেই টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।