উপকূলীয় বেশির ভাগ এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিতঃ মে ২৭, ২০২৪ | ৫:২৮ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ কবলিত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ উপকূলীয় এলাকা এখনও মোবাইল যোগাযোগ নেটওয়ার্কের বাইরে। রোববার রাত থেকেই অনেকে ফোনে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক কেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। মোবাইল অপারেটর রবি দাবি করেছে, তাদের কয়েকটি সাইট (টাওয়ার) অচল হলেও সেগুলো আবার চালু হয়েছে। বাংলালিংকের তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। গ্রামীণফোন জানিয়েছে, তারা দ্রুত সংযোগের আওতায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস শারফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি, সম্মিলিতভাবে কাজ করছি। এরই মধ্যে একটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম ও কন্ট্রোল রুম গঠন করা হয়েছে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা দ্রুত সংযোগের আওতায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। রাজধানীর বাসিন্দা জেসমিন জানান, তার বৃদ্ধ বাবা-মা থাকেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। রোববার রাত থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্য গ্রামের এক আত্মীয়ের কাছ থেকে বাবা-মা’র বিষয়ে জেনেছেন। উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ না থাকায় সাইটগুলো অচল হয়ে পড়লে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রতিটি সাইটে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্যে। কিছু সাইটে জেনারটরও রাখা হয়। তবে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় বিশেষ ব্যবস্থাতেও নেটওয়ার্ক সচল রাখা যায়নি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি রোববার রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। এরপর উপকূল থেকে শুরু করে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়। এখনও তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। মহাবিপৎসংকেত কমে আসলেও উপকূলীয় জেলাগুলোতে বেশ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। উপকূলের বেশ কয়েকটি এলাকার গাছপালা, ঘরবাড়ি তছনছ হয়েছে গেছে। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, কৃষি খামারসহ বিস্তীর্ণ মাঠ। এ পর্যন্ত সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী ও ভোলায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ভারী বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। বেশ কয়েকটি জেলা বিদ্যুৎহীন আছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে পড়ে।