মালয়েশিয়া সরকারের বাধ্যবাধকতা আরোপের আজ (৩১ মে) শেষ দিনে দেশটিতে ২৭১ জন কর্মীদের নিয়ে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে রাত ৮টায় বিমানের বিশেষ ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাবে। কিন্তু টিকেট ছাড়াই কয়েকশ মানুষ সকাল থেকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভিড় করে আছেন মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য। ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির দালালদের কথায় টিকিট ছাড়াই শুক্রবার ভোর থেকে তারা অপেক্ষা করছেন বিমানবন্দরে। কয়েকজন যাত্রী জানান, দুপুর ১টায় বিমানের একটি ফ্লাইটে তাদের মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু বিকাল সাড়ে ৪টায়ও ওই দালালের কোনো খবর নেই, টিকিটও দেননি। এ অবস্থায় মালয়েশিয়া যাওয়া অনিশ্চিত হয়েছে পড়েছে। মালয়েশিয়া যেতে বাংলাদেশি নতুন কর্মীদের সময় শেষ হচ্ছে শুক্রবার। এই সময়সীমার সুযোগ নিয়ে একটি চক্র মালয়েশিয়ার টিকেটের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই রুটে ৩০ হাজার টাকার টিকেটের দাম ১ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ নিয়ে মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক কয়েক হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন। মনিরুল ইসলাম নামের এক যাত্রী জানান, এজেন্সি তাদের দফায় দফায় সময় দিয়েও ফ্লাইটের টিকেট দিতে পারেনি। বলছে, টিকেটের দাম বেশি হওয়ায় তারা কুলিয়ে উঠতে পারছে না। সর্বশেষ সন্ধ্যার একটি ফ্লাইটের টিকেট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই টিকেট তিনি এখনও হাতে পাননি। এদিকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালের অনুরোধে মালয়েশিয়াগামী বাড়তি একটি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বিমানের কর্মকতারা জানান, বিজি ৩০৮২ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বেবিচক থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। রাত ৮টায় বিমানবন্দর থেকে ২৭১ জন যাত্রী নিয়ে বিমানের বাড়তি এ ফ্লাইটটি মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। উল্লেখ্য, সরকারিভাবে যারা মালয়েশিয়ায় ওয়ার্কার ভিসা (কর্মী ভিসা) পেয়েছেন তাদের ৩১ মের মধ্যে প্রবেশের বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে দেশটির সরকার। এরপর আর কোনো নতুন বিদেশি কর্মী দেশটিতে ঢুকতে পারবেন না। ১৬ মে পত্রিকায় জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি সবাইকে জানায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। তবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অনেক প্রবাসী এ কথা জানতেন না। ২০ মে এর পর বিষয়টি জানাজানি হলে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার হিড়িক পড়ে। এতে ফ্লাইটের সংকট দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে আজ ৩১ মে সময়সীমার কারণে হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এয়ারলাইন্স সংস্থাগুলো আসন সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী আছেন। গত বছর সেখানে গেছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন কর্মী। এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত গেছেন ৪৪ হাজার ৭২৭ জন। শুক্রবার সকাল থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে গেছে মালয়েশিয়ায়গামী তিনটি ফ্লাইট। রাত পর্যন্ত ছেড়ে যাবে আরও চারটি। এসব ফ্লাইটে যেতে পারবেন দেড় হাজার কর্মী।