দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে উপহার দিয়েছেন অনেক কালজয়ী ও শ্রোতাপ্রিয় গান। একমাত্র ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে কানাডায় আছেন এ শিল্পী। এক বছরের বেশি সময় দূরে থাকার পর সম্প্রতি গানে ফিরেছেন। আজ এ শিল্পীর জন্মদিন। ছেলের শারীরিক অবস্থা, জন্মদিন ও নতুন গান প্রসঙ্গে আজকের ‘হ্যালো...’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি। *জন্মদিন নিয়ে কি ভাবছেন? **আমার ছেলে অসুস্থ। এই অবস্থায় আমি মনে করছি জন্মদিনটা এখন আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই এই দিন নিয়ে কিছুই ভাবছি না। আমার সব চিন্তা এখন ছেলে নিবিড়কে নিয়ে। *নিবিড়ের শারীরিক অবস্থা এখন কেমন? **তাকে ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি, স্টিমুলেট থেরাপি দিচ্ছেন ডাক্তার। এখনো কথা বলতে পারছে না। তবে আগের চেয়ে অনেক বেটার। তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। অপেক্ষায় আছি ছেলের মুখে বাবা ডাক শোনার জন্য। নিবিড়ের সুস্থতার জন্য সবার দোয়া চাই। *সংগীতে চার দশক পার করলেন। অনুভূতি কেমন? **সংগীতের ভুবনে আমার চার দশক পার হয়েছে এটা আমি কখনই অনুভব করিনি। প্রশান্ত মহাসাগরের যেমন কোনো তল খুঁজে পাওয়া যায় না, ঠিক তেমনি সংগীতের বিস্তৃতিও একইরকম গভীর। *চার দর্শক পূর্তিতে কি কোন আয়োজন আছে? **একটি আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে, সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। অক্টোবর মাসে আমার গাওয়া পুরনো গান থেকে ৫০টি গান নতুন করে প্রকাশ করা হবে। সংগীতের ভূবনে আমার ৪০ বছর পূর্ণ হয় অনেক আগেই। ২০২২ সালেই আয়োজনটি করার পরিকল্পনা থাকলেও করোনার কারণে সেটা পিছিয়ে গেছে। এরপর হঠাৎ করেই নিবিড়ের দুর্ঘটনা। তারপর আর করা হয়নি। ফাইনালি এবার আয়োজন হচ্ছে। *দীর্ঘ পথচলায় শ্রোতাদের প্রত্যাশা কতটা পূরণ করতে পেরেছেন বলে মনে হয়? **শ্রোতাদের প্রত্যাশা পূরণে চেষ্টা করেছি। কিছুটা হয়তো সফল হয়েছি। তাই এখনো গাইতে পারছি এবং আমার অনেক গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। শ্রোতাদের ভালোবাসায় আজও গেয়ে যাচ্ছি। *আপনার সংগীত জীবনের টার্নিং পয়েন্ট কোন গানটি? **‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’ এই গানটি বিটিভির শিউলিমালা অনুষ্ঠানে গাওয়ার পর থেকে মানুষ আমাকে চিনতে শুরু করে। এই গানটা আমার টার্নিং পয়েন্ট হলেও ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’ গানটা আমাকে অন্য লেভেলে নিয়ে গেছে। এই গানটা আমাকে সংগীতে দীর্ঘস্থায়ী করেছে। একটা ভালো জায়গা করে দিয়েছে। *আপনার গানে না পাওয়ার আক্ষেপ, বেদনা, বিরহ, দুঃখ কষ্ট এসব বিষয় উঠে এসেছে। এর কারণ কী? **মানুষের জীবনে দুঃখ বেদনাটা অনেক বেশি বলে আমি মনে করি। সুতরাং দুঃখের বিষয়টা যে গানের সঙ্গে মিলে যায় সেই গানটা চিরস্থায়ী হয়ে যায় মানুষের মনে। আমি কিন্তু বিরহের গান একটু ব্যতিক্রমভাবে করার চেষ্টা করেছি। তোমাকে ছাড়া চলবে না, তোমাকে ছাড়া বাঁচব না-এই ধরনের বিরহের গান করিনি। *গান গাওয়া, সুর করা- কোন কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? **সুরকার, সংগীত পরিচালক, এসব কিছুই হতে চাইনি। হয়েছি মানুষজনের প্রেশারে। আমি শুধু গান গাইতে চাই। গান গাইতে ভীষণ রকম স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। *বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নতুন শিল্পীরা অন্য শিল্পীদের পরিচিত গান গাইতে বেশি দেখা যায়। কেন? **নতুনরা অনেকেই একাজটা করে থাকে। মূলত চমক দেখানোর জন্য। অন্যের গান করে কখনো নিজের পরিচয় তৈরি করা যায় না। যেমন ঈদে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিভিন্ন নামে অনেক অনুষ্ঠান হয়। অনেকে না ভেবেই চেহারা দেখাতে অংশ নেয় সেসব অনুষ্ঠানে। অনেকেই সেখানে অন্যের গান গেয়ে দর্শকদের বিনোদন দিয়ে আসে। কি দরকার এমন বিনোদন দর্শকদের দেওয়ার। রিয়েল তন্ময়