২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বাজেটে শুধু কালো টাকা সাদা করার সুযোগ। লুটপাটের সুযোগ। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে। এখানে চুরির সুবিধা বেশি। মানুষের বুকের ওপর চেপে বসেছে ‘দানব সরকার’। এদেরকে সরাতে না পারলে আমাদের মুক্তি নেই। শুক্রবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনাসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দল। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. গোলাম হাফিজ কেনেডির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ড. আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ। মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মিথ্যার ওপর টিকে আছে। তাদের যত পরিসংখ্যান সবই মিথ্যা ও বানানো। শুধু পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীরের বে-নজির নয়। এই সরকারের সবকিছুই হলো বে-নজির। এখান থেকে রক্ষা পেতে শহীদ জিয়াকে স্মরণ করে যার যার অবস্থান থেকেই সবাইকে জেগে উঠতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলতে হবে। এটি যত কঠিন কাজই হোক না কেনো। প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাজেটে দুর্নীতি করার মতো খাতগুলোতে বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। বিদেশ থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার, সেই অর্থ আবার বিদেশে পাচার হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার আমাদের সব কিছু ধ্বংস করেছে। এই ধ্বংসস্তুপ থেকে দাঁড়িয়ে উঠতে হবে। আমরা কেউ হতাশ নই, আমাদের কেউ দলত্যাগ করেনি, কেউ দল ছেড়ে যাবেও না। কারণ আমরা একটা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আছি। আমাদের দায়িত্ব, এই দানব সরকার উৎখাত করে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল জবাবদিহি সরকার গঠন করা। জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতির দুঃসময়ে রাষ্ট্রের পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাকে আমরা দেশের একজন যোগ্য, দক্ষ নেতা হিসেবে পেয়েছিলাম। স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারের দুর্নীতি অন্যায় ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমান কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। তিনি কৃষিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের সমৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিদেশে কর্মী পাঠানো, গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠা, পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠন করেছিলেন। মাঠে ঘাটে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কৃষির সেচের জন্য খাল খনন করেছিলেন। গ্রামে, উপজেলায় তিনি রাত্রিযাপন করেছিলেন। সেজন্য তাকে কেউ ভুলতে পারে না। আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বাংলাদেশের গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দুর্নীতি এবং চাঁদাবাজির কারণে। এসবই করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। কৃষির উন্নয়ন, মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন করতে হলে এ সরকারকে যেকোনোভাবে হোক ক্ষমতাচ্যুত করে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখন বাংলাদেশের প্রথম সমস্যা হলো দেশের সকল প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতিকরণ করেছে। সরকার সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের কব্জায় নিয়েছে। এই রাজনীতির পরিবর্তন না হলে, দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও হবে না। দুর্নীতিও বন্ধ হবে না। যারা মানুষের হক নষ্ট করে তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করা ইমানি দায়িত্ব।