রাজধানীর আদাবরে একটি ভাঙারি দোকানে গ্যাসের বোতল কাটার সময় বোতলে থাকা বিষাক্ত গ্যাসে কবির হোসেন (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ১৫-২০ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরবর্তীতে বোতলে থাকা গ্যাস পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ঘুমিয়ে থাকা অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে আদাবরের শ্যামলী হাউজিং দ্বিতীয় প্রকল্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কবির লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মৃত শফিউল্লাহর ছেলে। এছাড়া ইমরান শেখ (৪০), মহিউদ্দিন (৩৫), রুহুল আমিন (২৫), রাকিব (২৮), ওয়াদুদ (৬০), মন্নান (৫৫), সিরাজ (৬০), জাহিদ (২৫), রাহিম (২২), মেহেদী (২২) ও রকি (২৪) সহ আরও অনেকেই হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, বেড়িবাঁধের ওপর অবৈধভাবে গড়ে উঠা কালুর ভাঙারি দোকানে সিলিন্ডার ভাঙার সময় হঠাৎ চারিদিকে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এতে আশেপাশের বাসায় ঘুমিয়ে থাকা অর্ধশত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিষাক্ত গ্যাসের তীব্র দূর্গন্ধে সবাই এদিক ওদিক ছুটাছুটি শুরু করে। বাসায় ঘুমিয়ে থাকা অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটে গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া একজন মারা গেছেন। শ্যামলী হাউজিং দ্বিতীয় প্রকল্পের বাসিন্দা ইমরান শেখ জানান, ভোরের দিকে হঠাৎ করে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভাঙার পর তীব্র দুর্গন্ধ পাই। পরে দেখি আমার পরিবারের সবাই নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় ছটফট করছে। কোনো রকম বাসা থেকে সবাই বের হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছি। বাসা থেকে বের হওয়ায় সময় দেখি রাস্তায় অনেক লোকজন কাতরাচ্ছে। এই হাসপাতালে প্রায় ৩০-৪০ জন চিকিৎসা নিতে এসেছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আরেক বাসিন্দা মহিউদ্দিন জানান,সকালের দিকে হঠাৎ করে গ্যাসের তীব্র দুর্গন্ধ নিঃশ্বাস আটকে ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম ভাঙ্গার পর দেখি পরিবারের সবার একই অবস্থা। কোন রকম বাসা থেকে বের হয়ে লোকজন নিয়ে হাসপাতালে এসে অক্সিজেন দিয়ে রেখেছি। এলাকার অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রায় ১০০ লোক অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, ঘটনার পর থেকে ওই ভাঙারি দোকানের সবাই পলাতক। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। অসুস্থদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একজন নিহতের খবর পেয়েছি। তার পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। সিলিন্ডারে কী ধরনের গ্যাস রয়েছে সেটি জানতে সিআইডিকে খবর দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ শফিউর রহমান জানান, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৯ জন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। আরও পাঁচজন এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমাদের হাসপাতালে মোট ১৪ জন রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের বিষক্রিয়ায় এই দুর্ঘটনা হতে পারে।