ভাষাসংগ্রামী, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সংগঠক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা, বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক সভাপতি কামাল লোহানীর ৯০তম জন্মবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কামাল লোহানীর ৯০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন পরিষদ। আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজধানীতে বর্ণাঢ্যভাবে এ আয়োজন করার প্রস্তুতি চলছে। কামাল লোহানী তার দীর্ঘ জীবনে ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন ও কারাবরণ করেছেন। যুক্তফ্রন্টের অনুকূলে জনমত সংগঠন করেছেন। পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রে পূর্ববাংলার নাম পরিবর্তনের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষে রবীন্দ্রবৈরিতার বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম করেছেন। শরীফ শিক্ষানীতি ও হামিদুর রহমানের শিক্ষা কমিশনের প্রতিবাদে ছাত্র সমাজের লড়াইয়ে সহযোগী হয়েছেন। ছয় দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, গণঅভ্যুত্থান, নির্বাচন ও মহান মুক্তিযুদ্ধ- সবখানেই ছিল তার যথার্থ ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসাবে রেখেছেন কার্যকর অবদান। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর নিয়াজির আত্মসমর্পণের সংবাদ তিনি নিজে লিখে নিজেই পাঠ করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। কামাল লোহানী তরুণ বয়সে ছায়ানট, ক্রান্তি- দুই সংগঠনে যুক্ত থেকে নৃত্য, আবৃত্তি, অভিনয় করেছেন। আবার সংগীতে কণ্ঠ মিলিয়েছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলন, গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনসহ দেশের প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনেই সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। কামাল লোহানী নামেই সমধিক পরিচিত হলেও পারিবারিক নাম তার আবু নঈম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান লোহানী। বাবা আবু ইউসুফ মোহাম্মদ মুসা খান লোহানী। মা রোকেয়া খান লোহানী। তাদের বসতি ছিল যমুনা পাড়ে। খাস কাউলিয়ায়। আগ্রাসী যমুনায় তাদের বাড়িঘর জমি-জিরাত চলে যাওয়ার পর তারা সিরাজগঞ্জেরই উল্লাপাড়া থানার খান সনতলা গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। আর এই খান সনতলা গ্রামেই ১৯৩৪ সালের ২৬ জুন কামাল লোহানী জন্মগ্রহণ করেন।