সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের বেতুয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি হচ্ছে পাকা বাড়ি। পরিবেশ দূষণকারী প্লাস্টিকের বোতলে বালু ভর্তি করে সিমেন্ট দিয়ে পরিবেশবান্ধব এই বাড়ি তৈরি করছেন ইসরাফিল। স্থানীয়দের কাছে এই বাড়িটি বোতল বাড়ি নামে পরিচিতি পেয়েছেন। দুই কক্ষের এ বাড়িটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হতে শুরু করেছে। এই বাড়িটি উপজেলায় প্রথম তৈরি হওয়ায় থানাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ইসরাফিলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী এক ছেলে ও দুই মেয়ে অভাবের সংসারে তাদের। হাঁস লালন-পালন করে তাদের জীবন চলে। ছেলেমেয়েরা মাদ্রাসায় লেখা-পড়া করে। বোতলের বাড়ী নির্মানের ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রথমে তিনি ইউটিউবের ভিডিও দেখে বোতলের বাড়ী তৈরির উদ্যোগ নেন। বিভিন্ন ভাঙ্গারি দোকান থেকে কোমল পানির প্লাস্টিকের ১০ হাজার খালি বোতল সংগ্রহ করেন। প্রতি কেজি বোতল তিনি ৪০ টাকা দরে কেনেন। এতে তার খরচ হয় ১৬ হাজার টাকা। এরপর হাত দেন বাড়ি তৈরির কাজে\'। বাড়িটির দৈর্ঘ্য ২২ হাত ও প্রস্থ সাড়ে ১২ হাত। বাড়িটি তৈরির শুরুতে প্রাথমিকভাবে ইট দিয়ে কলাম তৈরি করেন। এরপর প্লাস্টিকের বোতলগুলোয় বালু ও মাটি ভর্তি করে সিমেন্ট দিয়ে দেয়ালের গাঁথুনি করেন। বাড়ীর দেয়াল সবে মাত্র গাঁথা হয়েছে। এখনো ওপরে চালা দেওয়া হয়নি। ইসরাফ্রিল জানান তিনি ওপরে টিনের চালা দিবেন। ইসরাফ্রিল আরো জানান, বাড়িটি তৈরি করতে সময় লেগেছে তার তিন মাস। আর ইট, সিমেন্ট, বালু, বোতল, রাজমিস্ত্রির বেতন মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো। শুধু ইট-সিমেন্ট দিয়ে বাড়ি তৈরি করলে তার খরচ আরো প্রায় তিন লাখ টাকা লেগে যেত। দেয়ালে ইটের পরিবর্তে বোতল দেওয়ায় কেউ কেউ নেতিবাচক বা তিরস্কার কথা বলতেন। আবার বাড়িটি পরিবেশবান্ধব ও সুন্দর হবে জেনে অনেকেই প্রশংসা করতেন। রাজমিস্ত্রী শফিক মোল্লা জানান, ইসরাফ্রিলের ইচ্ছের কথা শুনে আমিও কৌতুহলী হই এবং আগ্রহ নিয়ে কাজ করতে থাকি। ইতিমধ্যে বাড়ীর কাজের দেওয়ালের গাঁথুনির কাজ শেষ হয়েছে। গাঁথুনিও বেশ মজবুত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই বাড়ির প্রতিটি দেয়াল শীতে গরম, আর গরমে ঠাণ্ডা অনুভব হবে। ফলে বাড়িটি বসবাসের জন্য বেশ উপযোগী বলেই মনে হবে।\'