সিরাজগঞ্জে যমুনার অভ্যন্তরীণ চরাঞ্চলে বন্যায় প্রায় এক লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এতে কষ্টে দিন কাটছে লাখো পরিবার। একদিকে বন্যার পানি আর একদিকে প্রসেস মিল ও সুতা রঙের ডাইং এর বজ্র মিশ্রিত পানি, দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব। এদিকে বন্যার পানিতে এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৩ জুলাই\') সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, গত ১২ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।\' বন্যার পানিতে ডুবে নিহতরা হলেন-শাহজাদপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর মহল্লা আব্দুল হামিদের ছেলে মারুফ হোসেন (১৮), একই মহল্লার শাহ আলমের ছেলে সজল হোসেন (১৮), তৌহিদের ছেলে তন্ময় শেখ (২০), চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ইটাইল গ্রামের বায়েজিদের ছেলে শিশু কাউছার (৩), একই উপজেলার খাষপুকুরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কোদালিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে মাহিম হোসেন (৫) ও সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সাহেদ নগর ব্যাপারী পাড়ার আলী হোসেনের ছেলে রোমান হোসেন (১৪)। নিহত দুইজনের নাম-পরিচয় এখরো পাওয়া যায়নি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে ২৩ হাজার ৩০৬টি পরিবারের এক লাখ ৩ হাজার ৫৯৪ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যাদুর্গত এসব মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৩৩ টন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এখনও ১ হাজার ১৬৭ টন চাল, ২০ লাখ টাকা ও ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ আছে\'। তিনি আরও বলেন, চলতি বন্যায় জেলার সদর, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নৌকা ডুবে চারজন ও পানিতে ডুবে আরও চারজন মারা গেছেন।\' সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো নদ-নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। যমুনার পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল।\'