যারা নিজেদের রাজাকার বলে, তাদের পতাকা হাতে মিছিল করার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘যারা নিজেদেরকে রাজাকার বলে পরিচয় দেয়, তাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদের রক্তস্নাত লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে বা সে পতাকা কপালে বেঁধে নিয়ে মিছিল করবার কোনো অধিকার থাকতে পারে না।’ রোববার (১৪ জুলাই) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড আইডিতে এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। কোটাবিরোধী আন্দোলনে হঠাৎ করেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রোববার দিবাগত মধ্যরাতে। এদিন বিকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজাকার ইস্যুতে। সরকারের একটি কথার প্রতিবাদ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নিজেদের রাজাকার ঘোষণা করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। বিষয়টি একটা সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসের হলে হলে। রাতে হঠাৎ করেই সরকারপ্রধানের মন্তব্যের প্রতিবাদ করে নিজেদের রাজাকার ঘোষণা করে স্লোগান দিতে থাকেন। একটা সময় ঢাবির হল থেকে বের হয়ে রাতে শাহবাগে মিছিল নিয়ে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় আন্দোলন। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা। স্লোগান দিতে থাকেন, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’। শিক্ষার্থীদের এমন স্লোগান নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এমনই প্রেক্ষাপটে রোববার রাতে ফেসবুকে উল্লিখিত পোস্ট দেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল আদ্বিত্য পিয়াস নামে সাবেক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর পোস্ট নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন। যেখানে বলা হয়, ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার।’ আমরা জানি রাজাকার শব্দটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘৃণিত শব্দ। তাহলে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে রাজাকার বলছে কেন? উত্তর: ‘কেউ একজন’ আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সমাজকে রাজাকার বলেছেন সেই প্রতিবাদে সীমাহীন দুঃখকষ্টে বুকে নিয়ে বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত, অধিকারবঞ্চিত শিক্ষার্থী সমাজের নিজেদেরকে এই ‘রাজাকার’ বলাটা যে একটা শক্তিশালী আয়রনি, অনেক বড় একটা প্রতিবাদ- এই সামান্য বিষয়টি আমাদের আশপাশের অনেক বলদ বুঝবে না। এই সামান্য জিনিস বোঝার জন্য মাথায় কিছু জ্ঞানও তো থাকতে হয়!