বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে গত শুক্রবার (১৯শে জুলাই) মধ্যরাত রাত থেকে দেশব্যাপী কারফিউ জারি করে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে’ আসার দাবি করা হলেও আরও এক দফা বাড়িয়ে শনিবারও দেওয়া হয়েছে কারফিউ। সরকার বলছে, ‘সাবধানতার কারণে এখনও কারফিউ’ বহাল আছে। আর যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতি সার্বিকভাবে নিয়ন্ত্রণে না আসবে, ততদিন কারফিউ বহাল থাকবে। খবর বিবিসি বাংলার। শুক্রবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকেই ঢাকা শহরে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরে ওইদিন দিবাগত রাত ১২টা থেকেই জারি করা হয় কারফিউ। গত বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় ‘স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরত এসেছে’ বলে দাবি করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এদিকে ‘জনমনে স্বস্তি ফিরে এলেও সাবধানতার কারণে কারফিউ রাখা হয়েছে বলে’ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মন্ত্রী বলেন, কারফিউ দেওয়ার পরেই কিন্তু এই উচ্ছৃঙ্খল টেরোরিস্ট (জঙ্গি) যারা ছিল তাদের দমন করা গেছে। এখন জনমনে স্বস্তি এসেছে। সম্পূর্ণভাবে ফিরতে হয়ত কিছুসময় লাগবে। সেজন্য আমরা সাবধানতার কারণে এখনও কারফিউ রেখেছি। কারফিউ চলাকালে শুরুর দিকে সারা দেশেই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়। মঙ্গলবার থেকে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় আলাদাভাবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেয়া হয় কারফিউ। বুধবার থেকে ঢাকা, নরসিংদী, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ বাদে বাকি জেলাগুলোর কারফিউর সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনের হাতে। কিন্তু এই কারফিউ চলবে কতদিন?- এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন যে জনমনে স্বস্তি ফিরছে। এ কারণেই দুই ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা, চার ঘণ্টা থেকে পাঁচ ঘণ্টা এবং এটা (কারফিউ) ক্রমান্বয়ে আমরা কমিয়ে আনবো। তবে সম্পূর্ণরূপে আশ্বস্ত না হওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে বলে জানান তিনি। আইনমন্ত্রী বলেন, জনমনে যখন সম্পূর্ণ স্বস্তি ফিরবে, আমরা যখন মনে করবো জঙ্গিরা আর বাংলাদেশে এরকম অসহনীয় নৃশংসতা করতে পারবে না তখন কারফিউ উঠবে। উল্লেখ্য, প্রায় ১৭ বছর পর বাংলাদেশে আরেকটি কারফিউ জারির ঘটনা দেখা গেল। এর আগে, ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সবশেষ কারফিউ জারি করা হয়েছিল।