কোটা আন্দোলনকে ঘিরে নিহতদের স্মরণে আজ দেশব্যাপী শোক পালন করা হবে। এদিন কালো ব্যাজ ধারণ এবং মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া, মন্দির-গির্জা-প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন । বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সারা দেশে শোক পালনের অংশ হিসেবে কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে। মসজিদে দোয়া, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় প্রার্থনা করা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি সব নাগরিক এই কর্মসূচি পালন করতে পারবেন। তবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখায় বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’ এদিকে, শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন গত ১৬ জুলাই সহিংস রূপ পাওয়ার পর এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে। তবে সরকারের তরফ থেকে রোববার পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্ররা চলতি জুলাই মাসের শুরু থেকে ফের মাঠে। ধীরে ধীরে তাদের আন্দোলনের মাত্রা ও ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের সংঘাতের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। পরদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকে ৬ জনের মৃত্যুর খবর আসে। এর প্রতিক্রিয়ায় ১৮ জুলাই সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা হয়, সেদিন মাঠে নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও। গোটা দেশে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় সম্পদে হামলা শুরু হয়। প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়তে থাকে। রামপুরায় বিটিভি ভবন, মেট্রোরলের দু’টি স্টেশন, বনানীতে সেতু ভবন, মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাবস্টেশন, মেট্রোরেলের দু’টি স্টেশনেও ভাঙচুর হয় সেদিন। পরদিন পরিস্থিতির অবনতি হলে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করা হয় সারা দেশে। দুই দফায় তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে পুরো দেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় কারফিউ শিথিল করে অফিস-আদালত ও কলকারখানা আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও ট্রেন চলাচল এখনো বন্ধ আছে।