রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রেমিকা অলিম্পিক জিমন্যাস্ট আলিনা কাবায়েভার ঘরে তার ‘গোপন’ দুই পুত্র সন্তান রয়েছে বলে দাবি করেছে একটি তদন্তমূলক প্রতিবেদন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক তদন্ত সাইট ডসিয়ার সেন্টারের বরাত দিয়ে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, অলিম্পিক জিমন্যাস্ট আলিনা কাবায়েভা, যাকে পুতিনের দীর্ঘদিনের প্রেমিকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তার সঙ্গে পুতিনের সম্পর্কের ফলস্বরূপ এ দুই ছেলে সন্তানের জন্ম হয়েছে। ডসিয়ার সেন্টারের মতে, পুতিনের ওই দুই ছেলের একজনের বয়স পাঁচ বছর এবং অপরজনের ৯। এমনকি একটি রাশিয়ান সংস্থা নিয়মিত এ বাচ্চাদের দেখাশোনা করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে ডসিয়ার সেন্টারের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে। পুতিনের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বরাবরই গুঞ্জন ছিল, তবে এ বিষয়ে তিনি কখনও প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য দেননি। আলিনা কাবায়েভার সঙ্গে পুতিনের সম্পর্কও বহুদিন ধরে গোপন রাখা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত এ প্রতিবেদনটি তাদের সম্পর্ক এবং সন্তানদের বিষয়ে নতুন করে আলোকপাত করেছে। কাবায়েভার পরিচয় আলিনা কাবায়েভা একজন সাবেক অলিম্পিক স্বর্ণপদক বিজয়ী রিদমিক জিমন্যাস্ট, যিনি রাশিয়ার ক্রীড়া জগতে একটি সুপরিচিত নাম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুতিনের ঘনিষ্ঠ বলে ধারণা করা হয় এবং তাদের সম্পর্ক নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে বহুবার জল্পনা-কল্পনা প্রকাশিত হয়েছে। ডসিয়ার সেন্টারের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পুতিনের দুই পুত্র সন্তান অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে, সম্পূর্ণ নিরাপত্তায় এবং জনসাধারণের চোখের আড়ালে বড় হচ্ছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই সন্তানই পুতিনের প্রাসাদেই বসবাস করছে, যেটি মস্কোর উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। তারা জনজীবন থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করছে এবং তাদের বয়সি অন্য শিশুদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তারা ব্যক্তিগতভাবে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করছে এবং তাদের জন্য সাঁতার ও জিমন্যাস্টিক্সের প্রশিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এক সন্তানের নাম প্রকাশ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইভান নামের এক ছেলে জিমন্যাস্টিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় এবং প্রায়ই তার বাবার সঙ্গে হকি খেলে। পুরনো সম্পর্ক ও সন্তানদের পরিচয় ৭১ বছর বয়সি ভ্লাদিমির পুতিন অবশ্য প্রকাশ্যে তার দুই মেয়ে ছাড়া অন্য কারও পরিচয় দেননি। যাদের নাম মারিয়া (৩৯) এবং ক্যাটরিনা (৩৮)। পুতিন তার সাবেক স্ত্রী লুডমিলার সঙ্গে ১৯৮৩ সালে বিয়ের পর তাদের জন্ম হয়। ডসিয়ার সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে লুডমিলার সঙ্গে বিচ্ছেদ হলেও পুতিন ২০০৮ সাল থেকেই আলিনা কাবায়েভার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর কাবায়েভা ২০১৫ সালে সুইজারল্যান্ডের লুগানো শহরের একটি মাতৃসদনে ইভানের জন্ম দেন এবং পরে মস্কোতে ভ্লাদিমির জুনিয়রের জন্ম হয়। ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও জীবনযাপন পুতিনের পরিবার সম্পর্কে তথ্য অনেকাংশেই গোপন রাখা হয়। তবে গত বছর টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, পুতিন তার প্রেমিকা কাবায়েভার জন্য বড় সম্পত্তি কিনতে গোপনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। টেলিগ্রাফের সেই প্রতিবেদনে, পুতিন কাবায়েভার জন্য একটি বড় প্রাসাদ এবং একটি বিশাল পেন্টহাউস কিনতে অবৈধ তহবিল ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া এ ধরনের প্রতিবেদনের পর রাশিয়ার সরকার বা পুতিনের পক্ষ থেকে সাধারণত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। তবে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ নতুন তথ্যের মাধ্যমে পুতিনের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত হলেও, তার পরিবারের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও রাশিয়ার জনগণের কাছে অজানা। সূত্র: এনডিটিভি