ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার জার্মানি সফর করছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের সামরিক মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনীর সাফল্য অর্জন এবং ইউক্রেনে মস্কোর মারাত্মক হামলার কয়েকদিন পর জেলেনস্কি এ সফরে গেলেন। জার্মান সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, জেলেনস্কি এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ ফ্রাঙ্কফুর্টে ‘মুখোমুখি’ আলোচনায় বসবেন। মুখপাত্র ইউক্রেনের নেতার কর্মসূচি সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেননি। জার্মান নিউজ আউটলেট ‘দার স্পাইজেল’ জানিয়েছে, জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের রামস্টেইন বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ কিয়েভের সমর্থকদের সমাবেশে যোগ দেবেন। ফ্রাঙ্কফুটের দক্ষিণ-পশ্চিমের ঘাঁটিতে এই বৈঠকের আয়োজন করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রধান লয়েড অস্টিন। দার স্পাইজেল বলেছে, পোলতাভা শহরে একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫৫ জন নিহত এবং ৩শ’ জন আহত হওয়ার কয়েকদিন পর ইউক্রেনের মাটিতে এই ‘পরিস্থিতির ভয়াবহতার’ প্রতি গুরুত্ব দিতে জেলেনস্কি এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। অস্টিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (০৮০০ জিএমটি) বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন এবং বিকাল সোয়া ৪ টায় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করবেন। পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার বলেছেন, প্রায় ৫০টি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা জোরদার করা এবং মিত্রদের প্রতিরক্ষা শিল্প বৃদ্ধির জন্য উৎসাহিত করাসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ইউক্রেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠক ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের লড়াইয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করবে। মস্কোর বাহিনী দনবাসে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো। রুশ প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন, সংঘাতে ইউক্রেনের পূর্ব এলাকা দখল তার ‘প্রাথমিক উদ্দেশ্য’ ছিল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে মস্কো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এর পরিবর্তে তারা পূর্ব ইউক্রেন জয় করার চেষ্টায় মনোনিবেশ করেছে। গত মাসে যখন রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের আকস্মিক আক্রমণ রুশ বাহিনীকে বিপর্যস্ত করেছে। তখন পুতিন বলেছেন, এই পদক্ষেপ মস্কোর অগ্রযাত্রাকে বিলম্বিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। পুতিন যুক্তি দিয়েছিলেন, শত্রুরা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিজেকে দুর্বল করেছে। আমাদের সেনাবাহিনী তার আক্রমণাত্মক কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করেছে। কেইল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমি জানায়, যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় সমর্থক এবং ইউক্রেনকে ৫৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে। কিন্তু নভেম্বরে মার্কিন নির্বাচনের কারণে সেই অর্থায়নের ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জার্মানি ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমর্থক। কিয়েভকে সহায়তার জন্য জার্মানি অভ্যন্তরীণভাবে চাপের মধ্যে রয়েছে, যা ২০২৫ সালের বাজেটে প্রবল বাধার মুখে পড়তে পারে।