রংপুর সদর খাদ্য গুদামে (এলএসডি) ১৫০ টন চাল, ৩০০ কেজি গম আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার বাজারমূল্য প্রায় কোটি টাকা। এর সঙ্গে সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি) কানিজ ফাতেমা, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ অধস্তন ৮ স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরাসরি জড়িত রয়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি জানার পর তড়িঘড়ি করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড)। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, আহ্বায়ক তারাগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রউচ উদ্দিন, সদস্য সচিব পীরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অমূল্য কুমার সরকার, রংপুর উপজেলা কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক রিয়াজুল ইসলাম, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক তোজাম্মেল হোসেন ও জেলা খাদ্য পরিদর্শক মাজেদুল ইসলাম। কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছাড়া বাকি তিন সদস্য আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ওই তিন কর্মকর্তার তদারকিতে ছিল এলএসডি। অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, সদর খাদ্যগুদামে কয়েক দফা মজুত চাল ও গম ঘাটতির অভিযোগ পাওয়া যায়। অনুসন্ধানের প্রাথমিক তথ্যে ১৫০ টন চাল, ৫০০ কেজি গম ও চটের ৯ হাজার ৫০০ খালি বস্তা আত্মসাতের ঘটনা জানাজানি হয়। পরে ডিসি ফুড অন্তরা মল্লিক তড়িঘড়ি করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তার আগেই আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুল আলম প্রমোশন নিয়ে খাদ্য বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক হিসাবে ঢাকায় চলে যান। অভিযুক্ত আশরাফুলের সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, স্থানীয় কিছু চালকল মালিকের মাধ্যমে সদর খাদ্যগুদাম থেকে ওই বিপুল পরিমাণ চালসহ অন্য খাদ্যদ্রব্য এক বছর ধরে ক্রমাগত আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রতি মাসে ১৫ দিন অন্তর খাদ্যগুদাম মজুত পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের (ডিসি ফুড) দপ্তরে জানানোর দায়িত্বে থাকেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অন্তরা মল্লিক বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে ১৪৪ দশমিক ৭৪৪ টন চাল, ৩০৭ কেজি গম ও ৯ হাজার ৫৪৪টি খালি বস্তা পাওয়া যায়নি। এগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে বা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন ওসি এলএসডি হিসাবে নুরুন্নবী বাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত কানিজ ফাতেমার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এদিকে তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্যের নামে আত্মসাতের অভিযোগ থাকায় তাদের প্রতিবেদন সঠিক হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খাদ্য বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা।