প্রতি ২ মিনিটে মৃত্যু হয় এক প্রসূতির: জাতিসংঘ

প্রকাশিতঃ ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩ | ১০:১৯ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে কিংবা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বিশ্বজুড়ে প্রতি দুই মিনিটে একজন নারীর মৃত্যু হয়। সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন জটিলতায় নারীদের মৃত্যুর যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে নারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ লাভ ৮৭ হাজার গর্ভবর্তী নারীর মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০০ জন এবং প্রতি দুই মিনিটে একজন নারী মারা গিয়েছেন। ২০০০ সালে প্রতি ১ লক্ষে ৩৩৯ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যাটাই ২০২০ সালে কমে হয়েছে প্রতি ১ লক্ষে ২২৩ জন। বর্তমানে সংখ্যাটা কম হলেও বিষয়টা উদ্বেগ তৈরি করছে বিশ্বজুড়ে। ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ানের বিভিন্ন অঞ্চলে চালানো সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রসূতি মৃত্যুর হার ১৭ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড, এবং মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ৩৫ শতাংশ ও ১৬ শতাংশ হারে প্রসূতি মৃত্যু কমেছে। এই সমগ্র পরিসংখ্যাটি বিশ্বের ৩১টি দেশ নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে ভারতের অবস্থাও সঙ্কটজনক। ভারত সেই তিনটি দেশের তালিকায় রয়েছে যেখানে গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন জটিলতায় ১০ হাজার মহিলার মৃত্যু হয়েছে। ২০২০ সালে ভারতে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ২৪ হাজার। নাইজেরিয়ার পরই রয়েছে ভারতের স্থান। ওই বছর নাইজেরিয়ায় ৮২ হাজার নারী মারা গিয়েছেন সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে বা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়। ইউনিসেফের প্রধান নিবার্হী ক্যাথেরিন রাসেল প্রসূতি মৃত্যুর প্রসঙ্গে বলেছেন, লাখ-লাখ পরিবারের কাছে সন্তানের জন্মের আনন্দ পরিণত হয়েছে প্রসূতি মৃত্যুর মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায়। সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য বিশ্বের কোনও মায়েরই ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। বিশেষত, যখন চিকিৎসা বিজ্ঞান ও সরঞ্জাম উপলব্ধ। বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, প্রত্যেক জননী স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন এবং নিরাপদভাবে সুস্থ সন্তানের জন্ম দেবেন। এদিকে বিশ্বের প্রত্যেক নারী অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যাতে যথোপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা পান, তার উপরই জোর দিচ্ছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। তিনি মনে করেন, প্রজনন সংক্রান্ত যাবতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া অধিকার রয়েছে প্রত্যেক নারীর। এই কথায় আশ্বাস মিললেও জাতিসংঘের পরিসংখ্যানকে হালকাভাবে নেয়া যায় না। মূলত গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভপাত সংক্রান্ত জটিলতা, এইচআইভি-এইডসের মতো সংক্রমণ প্রসূতি মৃত্যুর জন্য দায়ী। এছাড়াও প্রান্তিক অঞ্চলে আয়, শিক্ষার মতো বিষয়গুলোও প্রসূতি মৃত্যুর জন্য দায়ী।