পশ্চিম তীরেও চলছে ইসরাইলের তাণ্ডব

প্রকাশিতঃ অক্টোবর ৪, ২০২৪ | ১১:০০ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

ইরান-লেবাননের পাশাপাশি আবার পশ্চিম তীরেও চলছে ইসরাইলি তাণ্ডব। তুলকারেম শরণার্থী শিবিরে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার এ হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। গত ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পশ্চিম তীরে যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালাল ইসরাইল। শুক্রবার আলজাজিরার প্রতিবেদনে ওঠে আসে এ তথ্য। পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনী যেভাবে শক্তির অপব্যবহার করেছে তা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গত কয়েক বছরে সেখানে ড্রোন বা হেলিকপ্টার থেকে হামলা হয়েছে। তবে প্রায় দুই দশক পর যুদ্ধবিমান থেকে ভয়াবহ হামলায় এক মা, তার দুই সন্তান এবং তার ভাইসহ কমপক্ষে ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। যে ভবনে হামলা চালানো হয়েছে সেটি মাটির সঙ্গে একেবারে মিশে গেছে। সেখানকার হাসপাতালগুলোতে তীব্র রোগীর চাপ দেখা দিয়েছে। তুলকারেম শরণার্থী শিবিরের জন্য এটা ছিল একটি ভয়াবহ দিন। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত দুদিনে জাতিসংঘের তিনটি স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এছাড়াও এ হামলায় পশ্চিম তীরের তুলকারম শরণার্থী শিবিরে হামাসের এক শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তুলকারম অঞ্চলে হামাসের নেটওয়ার্কের প্রধান জাহী ইয়াসের আব্দ আল-রেজেক আউফিকে তারা হত্যা করেছে। ফিলিস্তিন সরকার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যা বন্ধ করার জন্য। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্সির মুখপাত্রও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ধরনের হামলা কোনো পক্ষের নিরাপত্তা বা স্থিতিশীলতা আনবে না, বরং অঞ্চলকে আরও সহিংসতার দিকে ঠেলে দেবে। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়ে গেছে। ইসরাইলি বাহিনীর প্রতিদিনকার অভিযানে শত শত ফিলিস্তিনি গ্রেফতার হচ্ছেন এবং নিয়মিতভাবে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে গুলিবিনিময় হচ্ছে। আলজাজিরার ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা কর্তৃক যাচাই করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, শিবিরের উত্তর-পশ্চিম নাবলুসের আশপাশে ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য। পুরো এলাকা ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বলছিল। উদ্ধারকর্মীরা আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (পিডিএফ) অনুযায়ী, তুলকারেম শিবিরে ২১ হাজারের বেশি লোক বসবাস করেন। এটি মাত্র শূন্য দশমিক ১৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে অবস্থিত। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্সির মুখপাত্রও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ধরনের হামলা কোনো পক্ষের নিরাপত্তা বা স্থিতিশীলতা আনবে না, বরং অঞ্চলকে আরও সহিংসতার দিকে ঠেলে দেবে। আল জাজিরার সাংবাদিক নুর ওদেহ জানান, তুলকারেম শরণার্থী শিবিরে চালানো এই বিমান হামলা ছিল গত ২০ বছরের মধ্যে পশ্চিম তীরে সবচেয়ে বড় ও মারাত্মক হামলা। তিনি বলেন, দ্বিতীয় ইন্তিফাদা পর্বের হামলার দৃষ্টিতেও এটি ছিল একটি বড় ও মারাত্মক আঘাত। একটি ঘনবসতিপূর্ণ ও দরিদ্র শরণার্থী শিবিরে এ হামলা চালানো হলো।