নোবেল বিজয়ী এবং নারী অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন। সরকার পরিচালনায় তালেবানের নারী নীতিকে ‘চরম নারীবিরোধী, নৃশংস এবং নিপীড়ক’ হিসাবে চিহ্নিত করেন তিনি। বৃহস্পতিবার এক্স-এ শেয়ার করা একটি পোস্টে, আফগান নারী ও মেয়েদের ওপর তালেবানের পদ্ধতিগত দমনের সমালোচনা এবং বিধিনিষেধমূলক আইনের হিংসাত্মক প্রয়োগ তুলে ধরেছেন মালালা। জনসাধারণের মারধর এবং শিক্ষা, কাজ এবং চলাফেরার স্বাধীনতার উপর নিষেধাজ্ঞার উল্লেখ করে তিনি নারীদের প্রতি তালেবানের আচরণকে ‘লিঙ্গ বর্ণবৈষম্য’ বলে বর্ণনা করেছেন। মালালা অবিলম্বে বিশ্বব্যাপী হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে আফগান তালেবানকে আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে তাদের কর্মের জন্য দায়বদ্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। মালালা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, তালেবান তাদের নীতির ন্যায্যতা দিতে ধর্ম ও সংস্কৃতির অপব্যবহার করছে। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতায় এসে তালেবানরা আফগান নারীদের অনেক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। গত আগস্টে নতুন করে ৩৫টি নিয়মকানুন আইন হিসেবে কার্যকর ও নথিবদ্ধ করা হয়েছে। এমন সব আইন প্রবর্তন করা হয়েছে, যা নারীদের পুরুষদের সামনে জনসমক্ষে আসা নিষিদ্ধ করে এবং এমনকি তাদের কণ্ঠ ও মুখ জনসমক্ষে দেখা বা শোনা থেকেও নিষিদ্ধ করে। এসব আইনের কারণে আফগান নারীরা ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পদক্ষেপগুলোর সমালোচনা করে আসছে, কিন্তু এসব পদক্ষেপ বন্ধে সামান্যই দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মালালা ইউসুফজাই ১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মিনগোরায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা জিয়াউদ্দিন ও মা তুর পেকাই ইউসুফজাই। শত বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও নারী শিক্ষা বিস্তারে সক্রিয় অবদান রেখে আসছেন তিনি। মালালা মাত্র ১৭ বছরে বয়সে সর্বকনিষ্ঠ নোবেল জয়ী। ২০১৪ সালে শান্তিতে এ পুরস্কার পান তিনি। ওই সময় তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)’র প্রধান অংশের মুখপাত্র মোহাম্মদ উমর খোরাসানি দাবি করেছিলেন, মালালা ‘শিক্ষার জন্য নয়, পশ্চিমা সংস্কৃতির পক্ষে প্রচারণার’ জন্যই নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। ২০১৩ সালের ১২ জুলাই তার ১৬তম জন্মদিনে ‘মালালা দিবস’ ঘোষণা করে জাতিসংঘ।