ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে মিলিত হয়ে শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল বের করেন। পরে সকল আবাসিক হল প্রদক্ষিণ শেষে সাড়ে ১১টায় একই স্থানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন। সেখানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মিষ্টি ছুড়ে দেন সমন্বয় সালাহউদ্দিন আম্মার। মিছিলে শিক্ষার্থীরা `হৈহৈ রৈরৈ, ছাত্রলীগ গেলি কই\', `গণহত্যার সঙ্গী, ছাত্রলীগ জঙ্গি\', `ছাত্রলীগ দেখে যা, ক্যাম্পাসে তোর বাপেরা\', `একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর\', `ছাত্রলীগের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে\', `বাবুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে\', `গালিবের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে\'সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষর্থীরা বলেন, শুধু ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করলেই হবে না। ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগ সহ ১৪ দলের অন্তর্ভুক্ত জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ সহ সকল দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সেইসাথে পরবর্তীতে ছাত্রলীগের মতো কোনো ফ্যাসিবাদী সংগঠন যেন গড়ে না উঠতে পারে সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। সমন্বয় মেহেদী সজিব বলেন, ছাত্রলীগের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ দফা দাবির মধ্যে অন্যাতম ছিলো ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ দাবি। গত ১৫ বছরে তারা যে সকল অপকর্ম করেছে সেগুলো উল্লেখ করে আজ গেজেটে পাশ হয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘোষণার এই খুশিতে আমরা আজ এই মিষ্টি বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের বাকী যে চার দফা দাবি ছিলো সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী রাশেদ রাজন বলেন, একাত্তর পরবর্তী সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড একদিকে আর ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড অপরদিকে রাখলে দেখা যাবে তারা কয়েকগুণ বেশি অপরাধ করেছে। এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা করে নাই। ফ্যাসিবাদের অন্যতম হাতিয়ার ছিলো ছাত্রলীগ। গণভবন থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রতিটি ইঞ্চি মাটি দখল করে তারা অপরাধ কার্যক্রম চালিয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি বাংলাদেশের গণ মানুষের দাবি ছিলো। ছাত্রলীগকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হোক। সেইসাথে পরবর্তীতে ছাত্রলীগের মতো কোনো ফ্যাসিবাদী সংগঠন যেন গড়ে না উঠতে পারে সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। এর আগে রাত ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় মিষ্টি বিতরণের ঘোষণা দেন সমন্বয় সালাহউদ্দিন আম্মার। পরে শিক্ষার্থীরা জোহা চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। পরে চার শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে তারা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন।