যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে খাদ্য সংকট বেড়েই চলেছে। খাবার নেই। চরম সংকটে নাজেহাল দেশটিতে কমে গেছে ত্রাণ সরবরাহও। ক্ষুধার রাজ্যে পরিণত হয়েছে দেশটি। ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে দেশ ছাড়ছে হাজার হাজার মানুষ। দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ২৫ হাজার বাসিন্দা দেশ ছেড়ে পালিয়ে মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদে আশ্রয় নিয়েছেন। গত বছরের ১৫ এপ্রিল সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়। পরে এই সংঘাত দেশটিতে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। এরই মধ্যেই প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন অনেক মানুষ। যুদ্ধের কারণে দেশটির কৃষি উৎপাদন ৭৮ শতাংশ কমে গেছে। ফলে বেড়ে চলেছে ক্ষুধা সংকট। যার জেরে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পূর্ব চাদে পাড়ি জমিয়েছেন। যাদের বেশির ভাগ নারী এবং শিশু। এই সংখ্যা ২০২৪ সালে এক সপ্তাহের রেকর্ড সংখ্যা। চাদ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ। গত বছর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে চাদে এখন পর্যন্ত সুদানের ৬ লাখের বেশি আশ্রয় নিয়েছে। তবে সেখানেও দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। সুদানের দারফুর অঞ্চলের ফারচানা শিবিরের পরিস্থিতি দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। শিবিরে থাকা শরণার্থীরা গার্ডিয়ানকে তাদের হতাশার কথা জানিয়েছেন। অনেকেই ইতালি, ইউরোপের অন্যান্য দেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর দিকে অগ্রসর হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ফারচানা ক্যাম্পের পরিচালক হাতিম আবদুল্লাহ এল-ফাদিল বলেছেন, সংকট এতটাই দেখা দিয়েছে যে, সুদানিরা খাবারের জন্য শহরের বাজারে ভিক্ষা করতে যান। এছাড়া দারফুরের জমজম বাস্তুচ্যুতি শিবিরে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। সংঘাতের কারণে এই অঞ্চলে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছেন। ২৬ মিলিয়ন মানুষ মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে। হাসান ইব্রাহিম ইয়াহিয়া এখন ফারচানায় তাঁবুর পেছনে একটি ছোট জমিতে চিনাবাদাম চাষ করেন। তিনি বলেছেন, আমরা সব হারিয়েছি। কোনো আশা ছাড়াই আমরা অনেক কষ্টে বেঁচে আছি।