অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলছেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি ছাড়া কোনো জাতি উন্নতি করতে পারে না। যারা ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা করে তারা ক্রিমিনাল। তাদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি-বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দি হাঙ্গার প্রজেক্টের উদ্যোগে আয়োজিত সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ রফিক-উল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, আইপিএস ডেপুটি ডিরেক্টর ড. নাজমুল নাহার নূর লুবনা, টালিথাকুমি চার্চের বিশপ ফিলিপ পি অধিকারী, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মামুন আল মোস্তফা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার নিউমারারি শিক্ষক অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, দেশে সবার অধিকার সমান। এ অধিকার যেন কেউ খর্ব করতে না পারে, সে ব্যাপারে সরকার আন্তরিক। কিন্তু বর্তমানে দেশে অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছেন কেউ কেউ। তবে আমি তাদের আশ্বস্ত করতে চাই, দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার থাকাকালেই দুর্গাপূজা হয়েছে। অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সরকার শৃঙ্খলা বজায় রেখেছে। কঠিন চীবরদান হবে ৮ নভেম্বর। কেউ যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকার সতর্ক সব বিষয়ে। খালিদ হোসেন বলেন, একটি কথা স্পষ্ট বলতে চাই, ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। যারা উপাসনালয়ে হামলা চালায়, পরিবেশ বিঘিœত করতে চায়, তারা দুর্বৃত্ত, সন্ত্রাসী। তাদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় নেই। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বিভিন্ন ধর্ম ও মতের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর গণতন্ত্র ও সমঝোতার আকাঙ্ক্ষা শুরু হয়। এর মূলে ছিল সাম্য, ইনসাফ ও মানবিক মর্যাদা। দুঃখজনক হলেও অপরাজনীতি, ধর্মের অপব্যাখা, জাতিগত ভিন্নতার জন্য আমরা সে আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারিনি। কোনো একজন ব্যক্তির পক্ষে এটা সম্ভব নয়। এর জন্য সবাইকে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ রফিক-উল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ বহু জাতি-সংস্কৃতির দেশ। সাম্য, সম্প্রীতি, সহিষ্ণু ও বহুত্ববাদী সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্য জাতি-ধর্ম-দল-মত-লিঙ্গ-ভাষা নির্বিশেষে সবার সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবন্ধ হয়ে কাজ করি। সব মানুষের প্রতি মর্যাদা ও সমান শ্রদ্ধাশীল থাকব এটা আমাদের প্রত্যয় হোক। অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, আমরা এক ও অভিন্ন। নানা, জাতি, নানা বর্ণ ও নানা ধর্ম নিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ একটি সম্প্রীতির দেশ, শান্তির দেশ। শান্তির জন্য নিজের চিত্তকে বিকশিত করা প্রয়োজন। এছাড়াও এ সংলাপে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক, ধর্মীয় নেতৃত্ব, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।