গাড়ির সংখ্যা কত তা অনুসন্ধান করছে সরকার। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে গাড়ির সংখ্যা চাওয়া হয়েছে। অষ্ট্রেলিয়ার অভিবাসন অফিস ঢাকায় স্থাপন করা হবে। স্থায়ীভাবে এ অফিস খোলার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অভিবাসী অষ্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। অধিভূক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে একটি পৃথক সচিবালয় স্থাপন করা হবে। ওই দপ্তর থেকে অধিভূক্ত কলেরজগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। বাংলাদেশ ফুটবল দলের ছেলে এবং মেয়ে খেলোয়ারদের মধ্যে বিদ্যমান বেতন বৈষম্য দূর করা হবে। অপেক্ষমান ১৮ হাজার বাংলাদেশী শিগিগিরই মালয়েশিয়া যাওয়ার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠনের মধ্যে দিয়ে সরকারের নির্বাচনী অভিযাত্র শুরু হয়ে গেছে। ঢাকার যানজট নিয়ে সরকার ভাবছে এবং শিগগিরই ছাত্র-ছাত্রীরা এ কার্যক্রমে অংশ নেবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রাইব্যুনালের রায়ে দন্ডিত হলেই তাকে বন্দীবিনিময় চুক্তির আওতায় ফেরত চাওয়া হবে। গামেন্টস মালিকরা পালিয়েছে এবং বেতন না দেওয়ায় শ্রমিকরা রাস্তায় নামছে। এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম আইন উপদেষ্ট আসিফ নজরুল দেখভাল করবেন। বৃহষ্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে উপদেষ্টার পরিষদের বৈঠক পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব মো: শফিকুল আলম এ সব কথা বলেন। এ সময় উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন। প্রেস সচিব জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নির্ধারিত এজেন্ডার বাহিরে উল্লিখিত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার প্রয়োজনে গাড়ি ক্রয় করে। প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের দৈনন্দিন কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহƒত হয়। সরকার এ পর্যন্ত কত গাড়ি ক্রয় করেছে। কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে গত গাড়ি কেনা হয়েছে। গাড়িগুলোর বর্তমান অবস্থা কি? গাড়িগুলোর বয়স কত? এ সব বিষয়ে অনুসন্ধান করছে সরকার। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে গাড়ির হিসাব দিতে বলা হয়েছে। দ্রæততম সময়ের মধ্যে সরকার গাড়ির হিসাব পেতে চায়। প্রেসসচিব আরও বলেন, বৃহষ্পতিবার অষ্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন,অষ্ট্রেলিয়ার যে এলাকা থেকে তিনি নির্বাচিত সেই এলাকায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী বসবাস করছেন। অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় এক লাখ বাংলাদেশী বসবাস করছেন। তারমধ্যে বেশির ভাগ তার এলাকায়। অষ্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব পবির্তন হয়েছে, সে বিষয়টি তিনি তার দেশে বসেই বুঝতে পেরেছেন। কারণ সেখানে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী বসবাস করছে। এ সময় অষ্টেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিবাসন সেন্টার ভারতের নয়া দিল্লি থেকে ঢাকায় স্থানান্তরের প্রস্তাব দেন। এছাড়া নিয়মিত অভিভাসন নিয়ে সরকারের সঙ্গে আরও কথা বলতে চায় অস্ট্রেলিয়া। সরকারের তরফ থেকে নিয়মিত অভিবাস নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উভয় সরকার অভিবাসন নিয়ে কাজ করবে এবং বিপুল সংখ্যক অভিবাসী অস্টেলিয়ায় যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। প্রেস সচিব আরও বলেন, বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভ‚ক্ত সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা ড.ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে অধিভূক্ত সাত কলেজের জন্য একটি সচিবালয় স্থাপন করা হবে। ওই কলেজেগুলোর প্রশাসনিক কাজগুলো সেখান থেকে পরিচালিত হবে। এই সচিবালয়ের জন্য আলাদা রেজিস্টার থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশনের সমন্বয়ে এ সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সরকার প্রত্যাশা করছে এ উদ্যোগ গ্রহণের পর ছাত্ররা আর কোনো আন্দোলন করবে না। তারপরও যদি কারো কোনো কথা থাকে তা সরকার শুনবে। আলোচনার মাধ্যমে যে সমস্যা সমাধান সম্ভব তা বড় করে দেখার কি আছে। আলোচনার মাধ্যমে একটি সঠিক সমাধান সম্ভব। প্রেস সচিব আরও বলেন, মেয়ে ফুবলার দের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। চাকমা দুইজন মেয়ে যারা ভাল খেলেছে তাদের অভিনন্দন জানালে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণ হাততালি দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। মেয়ে ফুটবল টিমের সদস্যরা দুই মাস বেতন পাচ্ছেন না। এই সমস্যা সালাউদ্দিন সৃষ্টি করে গেছে। আমরা বিষয়টি দ্রুত নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করি শিগগিরই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এছাড়া মেয়ে খেলোয়ার এবং ছেলে খেলোয়ারদের বেতন বৈষম্য রয়েছে। বেতন বৈষম্য নিরসনে আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করেছি। আশা করি সমস্যার সমাধান করা যাবে। প্রেস সচিব আরও জানান, ভিসা প্রসেসিংয়ের নির্ধারিত সময় অতিক্রম করায় ১৮ হাজার শ্রমিককে নেয়নি মালয়েশিয়া। তাদের মালয়েশিয়া পাঠাতে সরকার কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তাদের ভেরিফিশনের কাজ শুরু হয়েছে। সরকার আশা করছে শিগগিরই তারা মালয়েশিয়া যেতে পারবেন। নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি যোগ্য নাগরিক এবং সমাজে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদের খুঁজে বের করে সুপারিশ করবে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপালনে যারা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ ছিলেন-এমন লোকদের খুঁজে বের করবে কমিটি। যাদের নির্বাচন ও প্রশাসন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের জন্য সুপারিশ করবেন। তারপর নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। তারা দেশে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এই প্রক্রিয়াটাইতো সরকারের নির্বাচনী অভিযাত্রা। যা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ঢকার যানজট নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ঢাকা মহানগীর যানজট নিরসেনে সরকার কাজ করছে, শিগগিরই পুলিশের পাশাপাশি ছাত্ররা যানজট নিরসনে দায়িত্বপালন করবে। যানজট জনজীবনের একটি সংকট। বিষয়টি সরকার সচেতন ভাবে নজরে রেখেছে। এ সময় প্রেস সচিব আরও বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর মানুষ মনের কথা বলতে পারেনি। কোনো দাবি দাওয়ার কথা বলতে পারেনি। এখন মানুষ মনে করে বর্তমান সরকার তাদের সরকার। সে কারণে মানুষ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে আনাকাঙ্খিত ট্রাফিক জ্যাম। বিষয়টি সরকার গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। প্রেস সচিব আরও বলেন, অনেক গার্মেন্টস মালিক পালিয়েছে। শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছেন না। ফলে তারা রাস্তায় নামছে। এ সব আমাদের সমাজ বাস্তবতা। সরকার তা অস্বীকার করছে না। এ সবের মধ্যে সরকার কোনো ধরণের ষড়যন্ত্র দেখছে কি না এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব জানান না। সরকার কোনো ষড়যন্ত্র দেখছে না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন-তিনি ট্রাইব্যুনালের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে বন্দীবিনিময় চুক্তির মধ্যে তাকে ফেরত চাওয়া হবে। সরকার এখন তাকে এখন ফেরত চাওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না। তাকে ফেরত চাইতে হলে তিনি দন্ডিত হবে। দন্ডিত হওয়া ছাড়া বন্দীবিমিয় চুক্তির আলোকে ফেরত চাওয়া যায় না। সংসদ কার্যকর না থাকায় এবং স্পীকার না থাকায় সংসদ সচিবালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজগুলো কে পরিচালনা করবে সে বিষয়ে কোনো বলা নেই। এ অবস্থা নিরসনে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে সংসদ সচিবালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।