রাতেই সমুদ্র যাত্রা শুরু করবে উপকূলের জেলেরা

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ৫, ২০২৪ | ৬:৪১ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

শুরু হচ্ছে দুবলার চরের শুটকি মৌসুম। তাই জাল, দড়ি, নৌকা-ট্রলারসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে সাগরে যেতে মোংলায় জড়োহতে শুরু করেছেন উপকূলের হাজার হাজার জেলে। ইতি মধ্যে মোংলার পশুর নদী ও মোংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতি নৌ-চ্যানেলে, চিলা নদী ও জয়মনির শেলা নদীতে। এসব এলাকায় অবস্থান করে বনবিভাগের পাস নিয়েই দল বেঁধে আজ তারা রওনা হবেন সাগর পাড়ের দুবলার চরে। সাগরে এখন আর দস্যুদের উৎপাত না থাকলেও ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি মাথায় নিয়েই সোমবার(৪ নভেম্বার) থেকে দুবলায় যাত্রা শুরু করবে বলে জানিয়েছে জেলেরা। আর সেখানে পৌঁছে মাছের ডিপো,থাকার ঘর ও দোকান নির্মান করবে কিছু জেলে। আর বাকীরা মাছ ধরার কাজ শুরু করবে। বনবিভাগ জানায়,৪ নভেম্বর থেকে বঙ্গোপসাগর পাড়ে সুন্দরবনের দুবলার চারটি চরে শুরু হচ্ছে শুটকি প্রক্রিয়াকরন মৌসুম। চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। টানা ৫ মাস সেখানে থাকতে হবে জেলেদের। সাগর পাড়ে গড়তে হবে জেলেদের অস্থায়ী থাকার ঘর, মাছ শুকানোর চাতাল, আর মাচা। সেসব তৈরিতে ব্যবহার করা যাবেনা সুন্দরবনের কোনো গাছপালা। তাই বনবিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী চরের উদ্দেশ্যে যাত্রার প্রস্তুতি নেওয়া সব জেলেকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় সামগ্রী। আর তাই চরে রওয়ানা হওয়ার আগে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন, মোংলা ও রামপালসহ সংলগ্ন উপকূলের কয়েক জেলার জেলে-মহাজনেরা। তবে এখনো অনেক জেলে-মহাজন প্রস্তুুতি শেষ করতে না পারায় কয়েকদিন পরে রওয়ানা হবেন। মোংলা নদী ও পশুর নদীতে এসে জড়ো হওয়া জেলে আবদুল মজিদ ও মহসিন বলেন, জাল, নৌকা, খাবারদাবারসহ ঘর বাঁধার সব সরঞ্জামাদী নিয়ে মোংলায় দুইদিন ধরে অবস্থান করছি। বনবিভাগের কাছ থেকে পাস নিয়ে দুবলায় রওনা হবো। সেখানে ৫ মাস থেকে মাছ ধরে শুটকি তৈরি করবো। তারা বলেন, কেউ সোমবার সকালে আবার বিকালে ,এভাবে দলে দলে জেলেরা ছুটবেন সাগরে। সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজি নুরুল কবির জানান, চাঁদপাই রেঞ্চ কর্মকর্তা রানা দেব জানান, মৌসুমকে ঘিরে উপকূলের বিভিন্ন এলাকার হাজার জেলে সমবেত হবেন দুবলার চরে। দুবলার আলোরকোল, মাঝেরচর, শ্যালার চর ও নারকেলবাড়ীয় চরে ওই সকল জেলেরা প্রায় দুই হাজার ট্রলার নিয়ে মাছ ধরবেন গভীর সাগরে। সাগর থেকে আহরিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বাছাই করে শুটকি করবেন তারা। এ বছরও চরে জেলেদের থাকা ও শুটকি সংরক্ষণের জন্য ১ হাজার ৩০টি জেলে ঘর, ৬৩টি ডিপো ও ৯৬টি দোকানঘর স্থাপনের অনুমতি দিচ্ছে বনবিভাগ। বনের কোন গাছপালা জেলেরা ব্যবহার করতে পারবেন না। তিনি বলেন, গত বছর জেলেদের মাছ আহরন ও শুটকি প্রক্রিয়া করনকে ঘিরে সাড়ে ৬ কোটি টাকা রাজ্বস্ব আদায় হয়েছিলো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। সাগর-সুন্দরবনে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয় থাকলেও জেলেদের মাঝে এখন আর নেই ডাকাতের ভয়ভীতি। তাই অনেকটা স্বস্তি নিয়েই সাগরে যাচ্ছেন জেলেরা। আবহাওয়া ভাল থাকলে লাভের পাল্লা ভারী করেই মৌসুম শেষে বাড়িতে ফিরবেন তারা।