এআইয়ের রহস্যময় ভবিষ্যদ্বাণী

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ৬, ২০২৪ | ৬:৫০ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে এই ভোটে কে জিতবেন তা নিয়ে কল্পনা-জল্পনা শেষ হয়নি। বিভিন্ন জরিপ, কার্টুন ইত্যাদি এই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে। এবার এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। খবর এনডিটিভির। প্রখ্যাত জ্যোতিষী নস্ত্রাদামুসের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে এআই চ্যাটবট জানিয়েছে, আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে অবাক করা পরিবর্তন এবং সম্ভাব্য সামাজিক অস্থিরতা শুরু হতে পারে। বিভিন্ন জরিপ এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মধ্যে ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে চ্যাটজিপিটি এআই বলেছে, সম্ভবত ট্রাম্প বা কমলা হ্যারিস কেউই এ নির্বাচনে সফল হবেন না। বরং কোনো এক ‘অপ্রত্যাশিত শক্তি’ অন্ধকারের গর্ভ থেকে উঠে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করবে। চ্যাটজিপিটি আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছে, ‘শেষ মুহূর্তে এক অপ্রত্যাশিত মোড়ের কারণে, শান্তিতে কেউই শাসনক্ষমতায় যেতে পারবে না। বরং আলোচনায় না থাকা একটি নাম উঠে আসবে অন্ধকার থেকে, যে দখল করবে ক্ষমতা। ট্রাম্প এবং কমলা যতই শক্তি দিয়ে লড়াই করুন না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেবেন অন্য কেউ-যে উঠে আসবে অন্ধকারের গর্ভ থেকে।’ ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের রানিংমেট হিসাবে লড়ছেন ওহাইওর সিনেটর জেডি ভ্যান্স ও মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজ। এই দুজনের কেউই মার্কিন রাজনীতিতে খুব একটা পরিচিত-আলোচিত মুখ নন। চ্যাটজিপিটির কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাহলে কী এই ভাইস প্রেসিডেনশিয়াল প্রার্থীদের মধ্যে কোনো একজন সেই রহস্যময় চরিত্র হতে পারেন? জবাবে চ্যাটজিপিটি বলেছে, ‘ভবিষ্যৎই তার উত্তর দেবে।’ নির্বাচনি পূর্বাভাসের বাইরে গিয়ে চ্যাটজিপিটি যে অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছে, তা মার্কিন নির্বাচনের সময় সম্ভাব্য রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক উত্তেজনার বিষয়ে। চ্যাটজিপিটি উল্লেখ করেছে, নির্বাচনের সময় প্রতিবাদ, সমাবেশ ও সম্ভাব্য সহিংসতার এক ভয়াবহ চিত্র, যা ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিল আক্রমণের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। চ্যাটজিপিটি বলেছে, ‘ঈগলের দেশে, বিভাজনে ক্ষতবিক্ষত সমাজে জন্ম নেবে বিদ্রূপ ও অস্থিরতা। প্রতিবাদ, মিছিল এবং সমাবেশ গর্জে উঠবে, দেশ ঢেকে যাবে কালো মেঘে।’ এমন হতাশাজনক পূর্বাভাস দেওয়ার পরও চ্যাটজিপিটি আশার বাণী শুনিয়েছে। এআই বলেছে, নির্বাচনের ডামাডোল থেমে গেলে নেতারা আবার নিজেদের মধ্যকার বিভেদ ভুলে একসঙ্গে শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবেন। গুগলের জেমিনি এআই অবশ্য মার্কিন নির্বাচনের বিষয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী বা আগাম মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছে। বরং জেমিনি এ বিষয়ে ব্যবহারকারীদের গুগলে গিয়ে অনুসন্ধানের পরামর্শ দিয়েছে। জেমিনি বলেছে, ‘আমি এখনই নির্বাচন এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’ জেমিনি স্বীকার করেছে নির্ভুল তথ্য সরবরাহ করা এর লক্ষ্য হলেও ভুল হতে পারে। এমনকি আরও জটিল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হলেও গুগলের চ্যাটবট নিজের অবস্থানে অটল থেকে নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়। এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের মহাতারকা খ্যাত শিশু জলহস্তী মু ডেং আবারও হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে। থাইল্যান্ডের চোনবুরি প্রদেশের খাও খেও খোলা চিড়িয়াখানায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ট্রাম্পের নাম লেখা দুটি ফল উপহার দেওয়া হয় মু ডেং’কে। চিড়িয়াখানা থেকে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, চার মাস বয়সী মু ডেং ট্রাম্পের নাম নির্বাচন করে। পরে দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটি ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রেও মু ডেংয়ের এ ভিডিও ব্যাপক ঝড় তুলেছে। জনপ্রিয় কৌতুকাভিনেতা বোওন ইয়াং তাকে ‘স্যাটারডে নাইট লাইভ’ কমেডি শোতেও তুলে ধরেছেন। এই শোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত লাইভ ভোটিংয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে দিয়েছে মু ডেং। দুই প্রার্থীর বিপরীতে মু ডেং ৯৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে। যদিও জলহস্তীর কাল্পনিক দক্ষতা তেমন পরীক্ষিত নয়। তারপরও বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনায় অন্যান্য প্রাণীর ফলাফলের বিষয়ে করা ভবিষ্যদ্বাণী অনেক সময় সঠিক হতে দেখা গেছে। বিশেষ করে অক্টোপাস পলের কথা উল্লেখ করা যায়। ২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে আটটি ম্যাচের সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করে বিশ্বজুড়ে তারকাখ্যাতি অর্জন করেছিল পল।