গণহত্যার আসামিদের ধরতে টালবাহানা পুলিশের

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ৭, ২০২৪ | ৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার সামনে গতকাল বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহত শিক্ষার্থীদের পরিবার বন্ধু স্বজন ও শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, আসামিদের দেখিয়ে দিলেও ধরতে গড়িমসি করছে থানা পুলিশ। গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মিরপুর-১০ গোলচত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানার সামনে অবস্থান নেন তারা। পরে পুলিশের সঙ্গে থানায় প্রবেশ করেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষের সামনে বিক্ষোভও করেন। বিক্ষোভের মুখে নিজ কক্ষ থেকে বেরিয়ে ওসি গিয়াস উদ্দিন ছাত্র-জনতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও আসামিদের গ্রেপ্তারে অগ্রগতি না থাকার কৈফিয়ত চান তারা। অন্যদিকে পুলিশের কাছে সন্তান হত্যার বিচার চান স্বজনরা। চিহ্নিত হত্যাকারীরা এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ জানান তারা। এসময় বিক্ষুব্ধদের সান্ত্বনা ও আসামি গ্রেপ্তারে আশ্বস্ত করেন তিনি। গণঅভ্যুত্থানের পর আহত-নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি গ্রেপ্তারের পরিসংখ্যান তুলে পুলিশের কার্যক্রমের ফিরিস্তিও তুলে ধরেন ওসি গিয়াস উদ্দিন। আন্দোলনে মিরপুরে শহীদ সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার বলেন, আমার ছেলে হত্যার মামলার একজন আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। আমার তো আরও একটা ছেলে আছে, স্ত্রী আছে। আসামিরা গ্রেপ্তার হলে আমি অন্তত আশ্বস্ত হই। শেখ হাসিনা পালালেও সন্ত্রাসীরা পালায়নি, হুমকিবোধ করছি। এসময় ওসি বলেন, সব মামলায় আমার সোচ্চার আছি। ৫ আগস্টের আগে যারা শহীদ হয়েছেন সেসব মামলা বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ওসি গিয়াস উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ৩৫টা মামলায় ৯০ জন আসামি গ্রেপ্তারের পর জেলে আছে। আদালত থেকে কেউ জামিনে বেরিয়ে গেলে আমাদের কিছু করার নেই। শহীদ শাহরিয়ার জাহান আলভীর বাবা আবুল হাসান বলেন, গত ৪ আগস্ট আমার ছেলে মিরপুর-১০ গোলচত্বরে গুলিতে নিহত হয়েছে। অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলা করেছি। আমি বাদী হয়ে হয়রানির শিকার। পুলিশ কোনো সহযোগিতা করছে না। ওসির বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হয়ে মিরপুরের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারসহ তিন দফা দাবি জানান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের মিরপুরের সমন্বয়ক এস এম সায়েম বলেন, তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, গণহত্যাকারীদের বিচার, রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর পদত্যাগ ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। তিনি বলেন, আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও আমরা রাজপথ ছাড়িনি। গণহত্যায় যারা জড়িত তাদের বিচার এই অন্তর্বতীকালীন সরকারের আমলেই করেই ছাড়ব।