নিপসমকে পাবলিক হেলথ ইউনিভার্সিটি করার দাবি

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ৯, ২০২৪ | ৬:৫৮ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানের জনস্বাস্থ্যবিদ তৈরির পাশাপাশি গবেষণা কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নিতে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে (নিপসম) পাবলিক হেলথ ইউনিভার্সিটি করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, নিপসম প্রতিষ্ঠার পর গত ৫০ বছরে জনস্বাস্থ্য শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নিপসমকে বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম চালু করা গেলে দেশ-বিদেশের স্বাস্থ্য ও দাতব্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক গবেষণা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো ও গবেষক তৈরি সহজ হবে। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) নিপসমের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর মহাখালী ক্যাম্পাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে বৈজ্ঞানিক অধিবেশন, সংক্রামক-অসংক্রামক ব্যধি ও পরিবেশগত স্বাস্থ্য নিয়ে নিপসমের গবেষণা ও অবদানের ওপর আলোচনা হয়। নিপসমকে পাবলিক হেলথ ইউনিভার্সিটি করার দাবি আলোচনায় সভায় নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জিয়াউল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের ৫০ বছরের সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে কীভাবে জনস্বাস্থ্য অবদান রেখেছে এবং রাখতে পারে সেটির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। নিপসমকে পাবলিক হেলথ ইউনিভার্সিটি করার দাবি কিউএস র‌্যাঙ্কিং / এশিয়ার সেরা একশতে নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে নিপসম প্রতিষ্ঠার সময়ে দুটি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে নয়টি এমপিএইচ প্রোগ্রাম এবং একটি এমফিল কোর্স পরিচালনা করছে। পাঁচ দশকে কয়েক হাজার জনস্বাস্থ্য পেশাজীবী তৈরি করেছে, যারা দেশ-বিদেশে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিষ্ঠানটি অসংখ্য জনস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা সম্পন্ন করেছে। যেগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে নিপসমের ২২টি একাডেমিক বিভাগ এবং আধুনিক ল্যাবরেটরি সুবিধা আছে। জনস্বাস্থ্য শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পরামর্শ সেবায় নিপসম শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। স্বীকৃতি হিসেবে নিপসমকে একটি বিশেষায়িত জনস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি ডক্টর অব পাবলিক হেলথ কোর্স চালুসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পাবলিক হেলথ সেবায় জুনিয়র কনসালটেন্ট পদ সৃষ্টির প্রয়োজন বলে জানান তিনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন দক্ষ জনস্বাস্থ্য জনবল তৈরি, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার ক্ষেত্রে নিপসমের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যে অসমতা দূরীকরণে নিপসমের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার প্রয়োজন আছে বলে উল্লেখ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্দিষ্ট আকারে প্রস্তাব দিলে বিষয়টি নিয়ে ভাবা হবে বলে জানান তিনি। স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারি বলেন, মানুষের সুস্বাস্থ্য অর্জন ও রক্ষায় জনস্বাস্থ্য একটি মৌলিক বিষয়। দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ তৈরি করেছে নিপসম। এ প্রতিষ্ঠানই প্রথম জনস্বাস্থ্যের ওপর এমপিএইচ কোর্স করে। তিনি নিপসমকে জনস্বাস্থ্য গবেষণায় প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো এবং সংযোগ স্থাপনের ব্যাপারে জোর দেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বলেন, স্বাস্থকর্মীদের জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে ও গবেষণার পদ্ধতি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণে নিপসমের অবদান অনস্বীকার্য। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসাইন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় নিপসমের অগ্রণী ভূমিকার কথা তুলে ধরে শিক্ষা, গবেষণা, প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার ব্যাপারে আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসাইন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিসহ নিপসমের শিক্ষক-কর্মচারী এবং জনস্বাস্থ্যের শিক্ষার্থী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে দুই পর্বের বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের আটটি গবেষণাপত্র এবং আরও আটটি গবেষণাপত্রের পোস্টার উপস্থাপন করা হয়। এতে যথাক্রমে চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. জিয়াউল ইসলাম এবং কীটতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার।