সরকারি কলেজে একটি কর্মশালায় গিয়ে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে ছাত্র-জনতার হাতে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক মনিরুল আলম (মাসুম)। গতকাল দুপুরে কক্সবাজারের চকরিয়া সরকারি কলেজে ঘটনাটি ঘটেছে। গত ৪ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কোটা আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে নানা ধরনের সেøাগান দিতে দেখা গিয়েছিল ২৪তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার তিন মাস পর গতকাল দুপুরে কলেজটি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা সংক্রান্ত এক কর্মশালায় গিয়ে এই হামলার শিকার হলেন আওয়ামীপন্থী এই কর্মকর্তা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে কয়েকটি কলেজের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে এই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে সকলের কাছে ঘুষ দাবি করেন। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিবেন বলে হুমকি দেয়। এই ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে মারধর করেন। এর আগেও ঐ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতেন। এই ছাড়াও তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়েও কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেন। চকরিয়া সরকারি কলেজের প্রিন্সিপালের নুসরাত জাহানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তার সহকারী ফোন রিসিভ করে ম্যাডামকে দিচ্ছি বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে আবারো ফোন করা হলে, তার সহকারী জানান, এ বিষয়ে প্রিন্সিপাল ম্যাডাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। এ ঘটনা আলোচনায় আসার পরপরই শিক্ষা ক্যাডারদের মধ্যে মাসুমের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। জানা গেছে, মনিরুল আলম (মাসুম) গত ৪ আগস্ট মাউশির সামনে ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের’ সমর্থনে একটি মিছিলে নেতৃত্ব দেন। তদুপরি, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) নতুন পরিচালকের যোগদানের পরও তিনি এবং তার সহকর্মীরা, যাদের মধ্যে দিদার, ওয়াইস আল কুরনি, আসমা, সাদিয়া, কামরুন্নাহার, মনিরা উল্লেখযোগ্য সেখানে বহাল আছেন। তাদের বিষয়ে ঘুষের মাধ্যমে বিদ্যালয় ও কলেজ পরিদর্শন, যার কমিশন ডিআইএ’র ঊর্ধ্বতন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছায় বলে অভিযোগ রয়েছে। ডিআইএ’র বর্তমান পরিচালক কাজী আবু কাইয়ুমের মদদ থাকায় এই কর্মকর্তারা বদলির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক মনিরুল আলমের (মাসুম) ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাছাড়া ডিআইএ’র পরিচালক কাজী আবু কাইয়ুমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনেও একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।