হাসিনা সঙ্গী-সাথী ফেলে রেখে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন: রিজভী

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ১৩, ২০২৪ | ৫:১০ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

শেখ হাসিনা সঙ্গী-সাথী ফেলে রেখে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন,\'কয়েকদিন আগে তারা নূর হোসেন দিবসে ঢাকা শহর নাকি উতাল পাতাল করে দেবে বলে হুঙ্কার দিয়েছিল। ওইদিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কয়েকটি মিছিল করেছে, ওদের মতো তো মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারা দেয়নি। তারপরও তো ওদের কোথাও দেখা যায়নি। কই যুবলীগ? কই ছাত্রলীগ?কারণ শেখ হাসিনা তাদেরকে লুটপাটের জন্য তৈরি করেছিলেন। রিজভী বলেন, ফরিদপুরের ছাত্রলীগের নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদেরকে বলেছিলেন তোরা যত পারোস লুটপাট কর, কিন্তু বিএনপিকে বের হতে দিবি না। বের হলেই হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়বি। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। তার পরিণাম হয় ভয়াবহ তাই হয়েছে। সঙ্গী-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মত পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। বুধবার রাজধানীর বনানীতে \'আমরা বিএনপি পরিবার\'র প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় জুলাই গণআন্দোলনে চক্ষু হারানো চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা আপনার মতো একজন রক্তপিপাসু নরক ঘাতক একনায়কের আর এই দেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের কোনো সুযোগ নেই। আপনি শিশুদের রক্তপান করা একজন রক্ত পিপাসু নারী। আপনি যে পাপ করেছেন, যে হত্যালীলা চালিয়েছেন এর জন্য হয় আল্লাহর কাছে মাফ চান, না হলে শয়তানের মত চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত হয়ে থাকবেন। বিএনপির এই নেতা বলেন,\'এই শেখ হাসিনা শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব তিনি জিম্মি করে দিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে। এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছে সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুন। তিনি দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাই। তিনি বলেন,\'আদানি বলে ভারতের একটা কোম্পানি তার সঙ্গে বিদ্যুতের চুক্তি করেছে। অত্যন্ত অসম চুক্তি, অত্যন্ত অন্যায় চুক্তি। এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাংলাদেশে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার কম। কিন্তু আদানির কাছ থেকে যেটা কিনা হয় সেটা এক ইউনিটের দাম ১২ টাকা। পৃথিবীর কোথাও এত দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কেনা হয় না। তিনি আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তাকে যদি কখনো পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে কোনো চুক্তি করেননি। না হলে আদানি কেন হুমকি দেবে? রিজভী বলেন,\'শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত প্রেম। ওই একটা-ই প্রেম ছিল শেখ হাসিনার। কারণ তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সুতরাং তার প্রেম কার সঙ্গে ছিল এটা জনগণ জানত এবং বুঝত। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, আপনাদেরকে তো সমস্ত গণতান্ত্রিক দল, ছাত্র, সংগঠন সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো দেখতে পাই স্বাস্থ্য বিভাগে যারা অন্যায় করেছেন দীর্ঘদিন, এখানে ডাক্তার যিনি হবেন তার যোগ্যতা দিয়ে হবেন, তিনি ভালো ডাক্তার কিনা, উন্নতমানের চিকিৎসক কিনা সেটা আওয়ামী লীগ বিবেচনা করেন নি। বিএনপি করতো কোন ডাক্তারের বাবা, চাচা, মামা শশুর তাদের কোনো পদোন্নতি হয়নি। তাদের কোথাও পদায়নও করা হয়নি। স্বাচিপ নামে তাদের একটি সংগঠন আছে আজকেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই স্বাশিপের চিকিৎসকদেরকে ঢাকা মেডিকেল সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তাদেরকে পদায়ন করা হচ্ছে। এগুলো যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার না দেখে, বিপদ তো তাদেরও হবে, আমাদের হবে। কোন ফাঁক দিয়ে যদি ওই দানবরা ডুকে পড়ার চেষ্টা করে তাহলে তো অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য শুভ হবে না। রিজভী বলেন,\'আমরা বলেছি যে মার্কেটগুলো এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে,বাজারগুলো এখনো তাদের সিন্ডিকেটের কাছে। আপনারা কি তাদের একজন লোককে ধরেছেন?একটা লোককে গ্রেফতার করেছেন? অথচ আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন তারপরও তো পেঁয়াজের দাম কমে না তারপরও তো আলুর দাম কমে না, চিনির দাম কমে না, আটার দাম কমে না সোয়াবিন তেলের দাম কমে না কারণ এগুলো ইমপোর্ট করতে হয়। দাম কমানোর জন্য আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন তারপরও কি দাম কমছে? কমছে না কারণ সিন্ডিকেটবাজদের কে আপনারা গ্রেফতার করতে পারেন নি। এই বিষয়গুলি আপনারা যদি না দেখেন পরাজিত ফ্যাসিস্টরা তারা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝে মাঝেই আওয়াজ দিবে ভূত-পেত্নীর মত আওয়াজ দিচ্ছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কোষাধক্ষ্য রশিদুজ্জামান মিল্লাত,সাংবাদিক মাসুদ কামাল,বিএনপির সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল,আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন,সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন, ছাত্রদলের ডা. আউয়াল প্রমুখ।