ইসরাইলের কারাগারগুলোতে অসংখ্য ফিলিস্তিনি নাগরিক বিনা বিচারে ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া আটক আছেন। তাদের অনেকেই বছরের পর বছর কারাবরণ করছেন। গত বছরের ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলার পর থেকে ইসরাইলে ফিলিস্তিনি বন্দির সংখ্যা আগের যে কোনো তুলনায় বেশি। সম্প্রতি দুই বন্দি মৃত্যুর পর ইসরাইলি কারাগারে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে দুটি ফিলিস্তিনি পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠী। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে মিডল ইস্ট আই। এক যৌথ বিবৃতিতে, ফিলিস্তিনি বন্দি বিষয়ক সাবেক মন্ত্রণালয় এবং ফিলিস্তিনি বন্দি সমিতি শুক্রবার সামিহ সুলেমান মুহাম্মদ আলীউই (৬১) এবং আনোয়ার শাবান মুহাম্মদ আসলিম (৪৪) এর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে আলীউই নাবলুসের বাসিন্দা এবং একজন হামাস নেতা। জানা গেছে, অসুস্থ হয়ে আয়লোন (রামলা) কারাগারের ক্লিনিক থেকে শামির মেডিকেল সেন্টারে (আসাফ হারোফেহ) স্থানান্তরিত হওয়ার ছয় দিন পর গত ৬ নভেম্বর তিনি মারা যান। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) এজেন্সি এবং ইসরাইলি কারা প্রশাসন এই ধরনের তথ্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও তার মৃত্যুর বিবরণ প্রকাশ করেনি। আলিউই তার স্বাস্থ্যগত সমস্যা সত্ত্বেও গত বছরের ২১ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের কারাগারে প্রশাসনিকভাবে আটক ছিলেন। তার আইনজীবীর উপস্থাপন করা বিভিন্ন সাক্ষ্য ইঙ্গিত দেয়, আলিউই গ্রেপ্তারের আগে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন এবং টিউমারের জন্য বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। কিন্ত এরপরও তার মুক্তি মিলেনি। শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হয়েই মৃত্যুবরণ করেন। অন্যদিকে, ইসরাইলি কারাগারে নিহত অপরজন হলেন আনোয়ার শাবান মুহাম্মদ আসলিম, যিনি গাজার চার সন্তানের জনক আসলিম, তার পরিবারের মতে, গ্রেপ্তারের আগে পূর্ব থেকে বিদ্যমান স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেননি। দুই পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠী বলছে, আলিউই এবং আসলিম ইসরাইলি কারাগারে দীর্ঘকাল ধরে পদ্ধতিগত নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, যার মধ্যে নির্যাতন, চিকিৎসা অবহেলা এবং জোরপূর্বক অনাহার ছিল। দল দুটি ইসরাইলকে দুই বন্দি, আলীউই এবং আসলিমের মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী করেছে। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, বন্দিদের বিরুদ্ধে অপরাধ বেড়েই চলেছে। বন্দিদের মধ্যে বিশেষ করে যারা অসুস্থ এবং আহত, এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতির কারণে মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে।