সরকারের সমালোচনায় মুখর থাকবেন নেতারা

প্রকাশিতঃ ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৩ | ১০:০৯ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

সরকারের সমালোচনা অব্যাহত রাখবে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের আবার নিষেধাজ্ঞায় পড়লে তা রাজনৈতিকভাবেও মোকাবিলা করা হবে। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের পক্ষ নিয়ে যেসব নেতা বাদ পড়েছিলেন, তাঁদের দলে ফেরানো হবে। তবে ক্ষমা পাবেন না সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা ও সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা। রোববার রাজধানীর বনানী কার্যালয়ে জাপার কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সংসদ সদস্যদের যৌথ সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারের দালাল কারা- তা নিয়ে সভায় উত্তপ্ত বাদানুবাদ হয় বলে সভা সূত্র জানিয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে জি এম কাদের বলেন, নিজস্ব রাজনীতি করবে জাপা। আদালতের আদেশে নিষেধাজ্ঞামুক্ত হওয়ার পর গতকালই তিনি প্রথমবারের মতো যৌথ সভায় অংশ নেন। এতে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের ছেলে এবং জাপার যুগ্ম মহাসচিব রাহগীর আল মাহী এরশাদ সাদও যোগ দেন। দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘ প্রকাশ্য বিরোধের পর গত ৯ জানুয়ারি রওশন এরশাদ এবং জি এম কাদের যুক্ত বিবৃতিতে ঐক্যের কথা বলেন। দেবর-ভাবির ঐক্যের ঘোষণা দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো দলীয় সভায় যোগ দিলেন রংপুর-৩ আসনের এমপি সাদ এরশাদ। দলীয় এমপিরা সরকারের দালালি করছেন বলে সভায় অভিযোগ করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম। তিনি বলেন, \'সংসদে জাপার এমপিরা বিরোধী দলের আসনে বসে সরকারের চাটুকারিতা করছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।\' এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন জাপার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ। তিনি বলেন, যারা কমিটি বিক্রি করে, তাদের মুখে সরকারের দালালির কথা মানায় না। কাজী ফিরোজকে থামানোর চেষ্টা করেন জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। জহিরুল আলমের বক্তব্যের পর কাজী ফিরোজ আবার বক্তৃতা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণে কার্যকর কমিটি নেই। বক্তৃতা দিয়ে তিনি চলে যান। বক্তারা দাবি তোলেন, জাপার এমপি ও নেতারা যেন সরকারের চাটুকারিতা না করেন। কেউ চাটুকারিতা করলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। জিএম কাদের বলেন, স্বতন্ত্র অবস্থান রেখে জাপা নিজস্ব রাজনীতি করবে। কারও দালালি করবে না। বহিস্কৃত এবং বাদ পড়া রওশনপন্থিদের দলে ফেরানো হবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা হয় যৌথ সভায়। সভা সূত্রের খবর, অন্যদের ফেরাতে আপত্তি না থাকলেও রাঙ্গা এবং মৃধাকে ফেরানোর পক্ষে নন অধিকাংশ নেতা। সভার পর মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, বহিস্কৃতদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন জি এম কাদের। তবে তাদের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নাও হতে পারে। জি এম কাদেরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ জাপা। রোববার সকালেও তিনি রওশন এরশাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। যৌথ সভায় বিভাগীয় সমাবেশ করার বিষয়ে আলোচনা হয়। আগামী নির্বাচনের আগে কাউন্সিল হবে। নির্বাচনে আগে সব জেলার কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। জাপা মহাসচিব জানান, চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী দেবে তাদের দল। ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে নির্বাচনের আগে পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখে। চুন্নু বলেছেন, সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্য ভালো হলে এবং সরকার চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। সভায় কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ফখরুল ইমাম এমপি, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা অংশ নেন।