সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বেশ কিছু সাংসদ, যার মধ্যে অন্যতম ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংসদ প্রীতি প্যাটেল। সোমবার, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো, ব্রিটিশ সংসদে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সুর চড়িয়েছেন সাংসদরা। বিশেষ করে বাংলাদেশের হিন্দু নিধন এবং সম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে তাঁদের চরম উদ্বেগ ও সরকারের পদক্ষেপ দাবি করেছেন তারা। গত বৃহস্পতিবার, কনজারভেটিভ পার্টির সাংসদ বব ব্ল্যাকম্যানও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে সরব হয়ে বলেছিলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের হত্যা এবং তাঁদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গোটা ঘটনায় দায় রয়েছে আমাদেরও, কারণ বাংলাদেশকে স্বাধীন হতে সাহায্য করেছিল ব্রিটেন।” এই বিবৃতির পর, সংসদে ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে বিদেশ সচিবের বিবৃতি দাবি করেছিলেন তিনি। প্রীতি প্যাটেলের উদ্বেগ সোমবার, ব্রিটিশ সংসদে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব প্রীতি প্যাটেল। তিনি বাংলাদেশে হিংসার বৃদ্ধিকে “অত্যন্ত উদ্বেগজনক” বলে মন্তব্য করেন। তাঁর মতে, “বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি। দেশটিতে হিংসা ক্রমেই বেড়ে চলছে। বাংলাদেশের সরকারের কাছে প্রশ্ন, লাগাতার হিংসা রোধে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?” তিনি আরও বলেন, “পূর্বতন ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখতে উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ব্রিটেন কি সেই ভূমিকা পালন করছে?” ব্যারি গার্ডনারের মন্তব্য অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সাংসদ ব্যারি গার্ডনারও বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও দেশের সাধারণ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অবস্থা খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে এবং তার প্রভাব ব্রিটেনের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জনগণের উপরও পড়ছে।” তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের সরকারের কাছ থেকে লিখিত বিবৃতি পাওয়া উচিত, যাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানানো হয়। ব্রিটিশ সরকারের প্রতিক্রিয়া এ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের উপসচিব ক্যাথরিন ওয়েস্ট সংসদে জানান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ সরকার যথাযথ নজরদারি করছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যত ও আন্তর্জাতিক প্রভাব ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এই আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছে যে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি শুধুমাত্র দেশটির অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং নিরাপত্তা প্রশ্নেই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের সঙ্কটের সমাধান চাইছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে ব্রিটেন, যেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, যেখানে আন্তর্জাতিক চাপ এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি রক্ষার প্রশ্ন একে অপরকে মোকাবেলা করছে।