নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া আগামীতে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা এসবের কোনো উত্তর দিচ্ছি না। জনগণ নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এটা আমাদেরও দাবি। এই দাবি আদায়ে সব বিভেদ ভুলে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দেশের মানুষের কাছে বার্তা দিতে হবে, বিএনপি প্রস্তুত, এবার আপনারা নামুন। সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মুক্তির দাবিতে’ এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা অবিলম্বে রুহুল কবির রিজভীর মুক্তির দাবি জানান। তারা বলেন, রিজভীর মতো একজন জনপ্রিয় নেতা কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কারাগারে তাকে সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে তাকে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সাবেক ছাত্রনেতা আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন- সাবেক ছাত্রনেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, জহির উদ্দিন স্বপন, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কামরুজ্জামান রতন, হামিদুর রহমান হামিদ, রকিবুল ইসলাম বকুল, আজিজুল বারী হেলাল, আব্দুল খালেক, ওবায়দুর রহমান চন্দন, জাকির হোসেন রোকন, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ। বিএনপির কঠিন বার্তার কারণে দেশের মানুষ টানেলের শেষে আলো দেখতে পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন আমির খসরু। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিএনপি বার্তা দিয়েছে, কঠিন বার্তা দিয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের মানুষ উজ্জীবিত হয়েছে, আশান্বিত হয়েছে। তারা একটি টানের শেষে আলো দেখতে পাচ্ছে। আমির খসরু বলেন, আন্দোলন, সমর্থন যেটা বাংলাদেশে ইতোমধ্যে একটা প্রচ্ছন্ন পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ আজকে রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ পরাজিত হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের অবস্থান জনগণের বিরুদ্ধে। একটি রাজনৈতিক দল যখন জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তখন সে রাজনৈতিক দলের ভরসা কোথায় থাকতে পারে! তাদের এখন দলীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দলীয় সন্ত্রাসীদের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে। সেটা সাময়িকভাবে চলতে পারে, কিন্তু টিকে থাকতে পারবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সরকার পতনের চলমান আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে বিএনপির পদাতিক বাহিনী হিসেবে দেখতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকেও ভূমিকা রাখতে হবে। আগামী ৪ মার্চ সব মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি আছে। ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক ৫১ থানায় এ পদযাত্রা কী হবে বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। এ পদযাত্রা বিশালভাবে করতে হবে। এ পদযাত্রা কর্মসূচি হচ্ছে শেখ হাসিনা পতনের সংকেত। আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনার পতন ছাড়া দেশ ও জনগণের মুক্তি নেই। এ লক্ষ্যে বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলন চলছে। পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মৃত্যু হবে, তবুও আমরা কেউ রাজপথ ছেড়ে যাব না। সুচিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে রুহুল কবির রিজভীকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।