জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কর্মকাণ্ডে একটি অদৃশ্য শক্তি হস্তক্ষেপ করছে। মঙ্গলবার বনানীতে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘দেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে’ জি এম কাদের বলেন, ‘দেশকে শুধু দুই ভাগ করা হয়নি, বরং এক ভাগকে আরেক ভাগের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে এবং পুলিশ ও বিচার বিভাগ বাধ্য হয়ে সেই শক্তির সহায়তা করছে। এভাবে স্থিতিশীলতা কখনোই আসতে পারে না।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বাংলাদেশে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে সন্দেহ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। কিন্তু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে শান্তি ফিরবে।’ তিনি দাবি করেন, জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হোক এবং তাদের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ঝুঁকি নিয়েছি’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা আগাগোড়া এই আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। আমাদের নেতা-কর্মীরা এই আন্দোলনে জীবন দিয়েছে। অথচ এখন আমাদেরই দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। শহীদদের অবদান অস্বীকার করা যাবে না মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘শহীদদের আত্মত্যাগকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি একটি ভয়ংকর প্রবণতা।’ অনুষ্ঠানের অন্যান্য বক্তারা জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরীফা কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাপার জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, এবং কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। প্রসঙ্গ: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বক্তব্যে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচন-সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা উঠে এসেছে। তার মতে, অদৃশ্য শক্তির হস্তক্ষেপের কারণে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।