ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শহীদদের গণকবরে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ায় যুবলীগ কর্মী মুরসালিন মোল্যাকে গ্রেফতার করেছে বোয়ালমারী থানা পুলিশ। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় পাঠানো হয়। মুরসালিন মোল্যা চতুল ইউনিয়নের চতুল গ্রামের দাউদ মোল্যার ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সন্ত্রাসী হামলার মামলায় মুরসালিন সন্দেহভাজন হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবসের সকালে, যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের কিছু নেতাকর্মী বোয়ালমারী পৌরসদরের সরকারি কলেজ সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের গণকবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে যান। সকাল সাড়ে ১১টায় তাদের একটি ঝটিকা মিছিল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পৌঁছায়। মিছিলের সময় তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগানও দেন। ঘটনার ভিডিও এবং ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক আলোচনা এবং সমালোচনার জন্ম দেয়। এর পরই পুলিশ গভীর রাতে মুরসালিনকে গ্রেফতার করে। কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাফর ইকবাল জানান, মুরসালিন মোল্যাকে কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সন্ত্রাসী হামলা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, পুলিশ দাবি করছে যে, মিছিলের সময় গঠিত স্লোগান এবং ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা সরকার ও জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। ফলে, মুরসালিনকে গ্রেফতারের পর এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনার পর স্থানীয় জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এই গ্রেফতারের ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখছেন, আবার কিছু জনমত এই পদক্ষেপকে আইনগত সঠিক হিসেবে মনে করছেন। বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান, কিন্তু এর সঙ্গে সংযুক্ত রাজনৈতিক স্লোগান এবং এর পরবর্তী ফলাফল স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে। এখনো এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে, এবং এর ফলস্বরূপ রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।