আগের দুই দফায় ৪৬টি কোম্পানির ২ হাজার ৩৬০টি বাসে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু হলেও, তা পুরোপুরি কার্যকর নয়। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ১৩টি কোম্পানির ৯৪৭টি বাসে ই-টিকিটিং চালু করছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
মঙ্গলবার ইস্কাটনে সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এ ঘোষণা দিয়েছেন। আগে চালু হওয়া বাসে ই-টিকিট মেশিন বন্ধ রেখে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেছেন, শৃঙ্খলা আনতে সমিতির চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। যাত্রীরাও যেনো টিকিট ছাড়া ভাড়া না দেন।
ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় ৯৭টি কোম্পানির ৫ হাজার ৬৫০টি বাস চলে। খন্দকার এনায়েত জানান, ১৩ নভেম্বর ৩০ কোম্পানির ১ হাজার ৬৪৩ বাসে ই-টিকেটিং চালু করা হয়। ১০ জানুয়ারি ১৬ কোম্পানির ৭১৭ বাসে চালু হয়। ১ মার্চ থেকে ৯৪৭টিসহ ৫৯টি কোম্পানির মোট ৩ হাজার ৩০৭টি বাসে ই-টিকিট কার্যকর হতে যাচ্ছে।
ডিজেলের দাম দুই দফা বৃদ্ধিতে ঢাকায় বাসের ভাড়া কিলোমিটারে ভাড়া দুই টাকা ৪৫ পয়সা। অধিকাংশ বাসে তা মানা হয় না। মামলা ও জরিমানাতেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বাড়তি ভাড়ার জন্য ওয়েবিল পদ্ধতিকে দায়ী করা হয়। সমালোচনার মুখে তা বন্ধ করে সমিতি। চেকিং উঠে যাওয়ায় চালক-শ্রমিকদের কাছ থেকে যাত্রীর সঠিক হিসাব না পাওয়ায় মালিকের আয় কমে যায়। চুরি ঠেকাতে ই-টিকিট চালু করে সমিতি।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় ২০টি বাসে চড়ে ১৯টিতেই ই-টিকিটের মেশিন দেখা যায়নি। কয়েকটি বাসে দেখা গেছে, পুরনো ওয়েবিল পদ্ধতিতে ফিরে এসেছে। পুরনো কৌশলেই যাত্রী যেখানেই নামুন, দূরবর্তী গন্তব্যের ভাড়া তথা বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে। মজুরি না বাড়ায় ই-টিকিট লোকসানের বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেশিন নেই বা নষ্ট হওয়ার অজুহাতে হেলপাররা টিকিট দেন না যাত্রীদের। খন্দকার এনায়েত বলেছেন, এখানে আর্থিক বিষয় জড়িত। কাজেই এটা বুঝতে পারছেন। শ্রমিকদের সঙ্গে কয়েকবার বসেছি। প্রতিটি কোম্পানিকে বলা হয়েছে শ্রমিকদের সচেতন করতে।
খন্দকার এনায়েত স্বীকার করেন ই-টিকিট কার্যকর করা অনেক কঠিন। তিনি জানান, যাত্রীদের সুবিধায় ই-টিকিট চালু হয়েছে। গেটলক ও সিটিং সার্ভিস বন্ধের মতো ই-টিকিটিংও কার্যকর হবে। অনিয়ম বন্ধে ৯ জন স্পেশাল চেকার নিয়োগ করা হয়েছে। আরও ১০ জন নিয়োগ করা হবে। বহু বছর ধরে চলে আসা ভাড়া নিয়ে অনিয়ম দূর করতে সময় লাগবে।
এদিকে শ্রমিকদের দায়ী করা হলেও অনেক মালিক এখনও চুক্তিতে বাস চালাচ্ছেন। খন্দকার এনায়েত বলেছেন, বেতনও আছে, চুক্তিতেও চলছে। চুক্তি বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। ই-টিকিটিং কার্যকর হলে চুক্তিতে বাস চালানো বন্ধ হয়ে যাবে। ই-টিকিট কার্যকরের পর মানোন্নয়ন এবং লক্কড়ঝক্কড় বাস বদলে যাত্রীবান্ধব করার পরিকল্পনা রয়েছে। ভাড়া সঠিক কি-না তা নিশ্চিতে টিকিটের গায়ে আগামী সপ্তাহ থেকে দূরত্বও লেখা থাকবে।