তামিম-হাথুরুর অন্যরকম পরীক্ষা

প্রকাশিতঃ মার্চ ১, ২০২৩ | ১০:০৬ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

দেশে এখন বসন্তকাল হলেও ক্রিকেটে তপ্ত গ্রীষ্ম। ড্রেসিংরুম নিয়ে বিসিবি সভাপতির খোলামেলা সাক্ষাৎকার বিতর্কের খোরাক দিয়েছে। এই বিতর্ক সাকিবের চেয়েও তামিমকে নাড়া দিয়েছে বেশি। ওয়ানডে অধিনায়ক সংবাদ সম্মেলনে এসে সেই বিতর্ক ভালোভাবেই সামলে গেছেন। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকেও গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাইরের বিতর্কের ইস্যুতে প্রশ্নের মুখে পড়তে হলো এবং তিনি সেটা অভিজ্ঞতার আলোকে সামলে নেন। তিনি সোজা বলে দেন, একজনকে ভালো বন্ধু হতে নৈশভোজে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সাকিব-তামিমের দূরত্ব দলের ভেতরে প্রভাব না ফেললে কোনো সমস্যাও দেখেন না হাথুরু। বাকি থাকলেন সাকিব। তিনিও হয়তো একই কথা বলবেন। এ থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার– গত কয়েক দিন যে বিতর্কের উত্তাপে পুড়েছে দেশের ক্রিকেট, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠের পারফরম্যান্সে তা প্রভাব ফেলবে না। তামিম ইকবাল বা চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যতই বলেন না কেন, বাইরের বিষয় মাঠে প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু দু’জনেই হয়তো ভুলে যাচ্ছেন বিতর্ক অনেকটা ছাই চাপা আগুনের মতো, ওপরটা ধূসর ভেতরে গনগনে তপ্ত লাল। একটু ঘেঁটে দিলেই উত্তাপ ছড়ায়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজ দ্বারে কড়া নাড়ায় পেছনের বিতর্ক কিছুটা চাপা পড়লেও ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে সেটা ফিরে আসতে পারে কিনা। তিন ম্যাচের সিরিজ আজ জয় দিয়ে শুরু করা গেলে ফোকাসটা মাঠের ক্রিকেটে চলে যাবে। সমর্থকরাও আর পেছনে ফিরে যেতে চাইবেন না। তামিমও নিশ্চয়ই চাইবেন না খেলার বাইরের বিষয় নিয়ে বেশি কথা হোক। সেদিক থেকে অধিনায়কের জন্য এটি পরীক্ষার সিরিজও। এর পেছনে অনেকগুলো কারণও রয়েছে– ছয় মাস হলো জাতীয় দলের হয়ে কোনো ধরনের ক্রিকেট খেলেননি, গুঞ্জন রয়েছে কুঁচকির চোট দেখিয়ে ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজ এড়িয়ে গেছেন। এ নিয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারির সংবাদ সম্মেলনে অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে ড্রেসিংরুম বিতর্ক। এই জিনিসগুলো একটু হলেও চঞ্চল করেছে তামিমের মন। যেটা তাঁকে ভালো খেলতে উজ্জীবিত করতে পারে, আবার নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ব্যাটিংয়ে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যাবে দল ভালো করলে। অধিনায়কের মতো অত বেশি না হলেও ইংলিশদের বিপক্ষে হোম সিরিজটি কোচের জন্যও পরীক্ষার। তাই শুরুটা ভালো করার অপেক্ষায় তিনি, ‘ব্যাটিং বা বোলিং যাই করি, একটা ভালো শুরু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ এই ভালো শুরুর জন্যই নিজেদের মতো করে কন্ডিশন বানানো হয়েছে মিরপুরে। এশিয়ার বাইরের দলগুলোর জন্য সাধারণত ট্রিপিক্যাল এবং টার্নিং উইকেট করা হয় মিরপুরে। যেখানে ২০১৬ সালে ইংলিশদের টেস্টেও হারিয়েছিল বাংলাদেশ। পুরোনো কৌশল বিশ্বকাপ সুপার লিগের ওয়ানডে সিরিজেও প্রয়োগ করবেন কোচ চন্ডিকা। প্রথম দুই ম্যাচে একাদশ নিয়েও খুব একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন না। তিনি বলেন, ‘আমি সাত দিন হয় এসেছি, তাই খুব বেশি কিছু বলব না। তারা ভালো ক্রিকেট খেলছে। আমার কাজ হবে দেখে যাওয়া। তাদের প্রসেস সফল হলে আমার বলার কিছু নেই। প্রথম দুটি ম্যাচ দেখব, এর পর হাত দেব।’ এই মিশন সফলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে ইংল্যান্ডের বোলিং ইউনিট। তাঁর মতে, ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা পেস বোলিং আক্রমণ তাঁদের। পাঁচজন ফাস্ট বোলার ও তিনজন স্পিনার রয়েছে। এই সিরিজে তাঁদের ফাস্ট বোলাররাই চ্যালেঞ্জ হবে।’ এর পরও কথা থাকে, ট্রিপিক্যাল মিরপুরের উইকেটে খেলা হলে জোফরা আর্চাররা খুব একটা সুবিধা করতে পারবেন না। বরং ইংলিশদের বিপক্ষে সাত বছর পর দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে নেমে উপেক্ষার জবাব দিয়ে দেবে বাংলাদেশ।