আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের অনুমতি দেওয়া হবে যে শর্তে!

প্রকাশিতঃ জানুয়ারি ২৯, ২০২৫ | ৮:১৩ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

আওয়ামী লীগের আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দলের গণহত্যার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার রাতে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ ঘোষণা করেছে, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নয় দিনব্যাপী দেশব্যাপী মিটিং-মিছিল করবে তারা। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতাল পালন করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বুধবার আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নামে একটি লিফলেট প্রকাশ করেছে, যেখানে দলীয় নেত্রী হাসিনা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হতে। শফিকুল আলম তার পোস্টে উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগকে গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি বলেন, \"গত বছর আগস্টে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো ন্যায্য বিক্ষোভ দমন বা নিষিদ্ধ করেনি। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে পাঁচ মাসে শুধু ঢাকায় অন্তত ১৩৬টি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি বিক্ষোভ ব্যাপক যানজট সৃষ্টি করেছে। তবুও সরকার বিক্ষোভ-সমাবেশের ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি।\" এরপর তিনি প্রশ্ন তোলেন, \"ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে কি বিক্ষোভের সুযোগ দেওয়া উচিত?\" শফিকুল আলম আরও বলেন, \"জুলাই-অগাস্টের ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হত্যায় অংশ নিয়েছে। তাদের পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে কয়েকশ তরুণ শিক্ষার্থী ও শিশু শহিদ হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা, খুন ও তাণ্ডবের জন্য আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে।\" শফিকুল আলম তার পোস্টে আরও দাবি করেন, নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শেখ হাসিনা তার ১৬ বছরের শাসনামলে সরাসরি হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন এবং জোরপূর্বক গুম করিয়েছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, \"একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন প্যানেলের তথ্যমতে, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা তার শাসনামলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তির মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার চুরির অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।\" এছাড়া তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তি জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন, তিন হাজার মানুষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। শাপলা চত্বরে গণহত্যার অভিযোগও তিনি পোস্টে উল্লেখ করেন। শফিকুল আলম আরও বলেন, \"শেখ হাসিনার শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘পুলিশ লীগে’ পরিণত হয়েছিল। প্রায় ষাট লাখ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ভুয়া ও গায়েবি মামলা দেওয়া হয়। এমনকি দেশের প্রথম হিন্দু প্রধান বিচারপতিকেও নির্মমভাবে মারধর করে পদত্যাগে বাধ্য করা হয় এবং তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়।\" আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, \"যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ গণহত্যা, দুর্নীতি ও হত্যার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইবে এবং অপরাধীদের বিচারকার্যের আওতায় আনবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের আন্দোলনের অনুমতি দেওয়া হবে না।\" তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কোনো দেশ কি খুনি ও দুর্নীতিবাজদের আবার ক্ষমতায় আসতে দেবে? মিত্রবাহিনী কি নাৎসিদের বিক্ষোভের অনুমতি দিয়েছিল?