মাগুরার শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেখানে প্রতিদিন আউটডোরে সেবা নিতে আসে ৩ শতাধিক রোগী, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা থাকে ৭০ থেকে ৮০ জন এবং ইমারজেন্সিতে সেবা প্রদান করা হয় অর্ধশতাধিক সেবা প্রত্যাশীকে।
শালিখা উপজেলার মোট জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ সেবা প্রত্যাশীদের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বাঘারপাড়া উপজেলা থেকেও এখানে সেবা নিতে আসেন অনেকে। তবে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সংকট চরমে ফলে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন রোগী ও সেবা প্রত্যাশীরা।
শুধু চিকিৎসক নয় চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর সংখ্যাও শূন্যের কোঠায় দুইজন নিরাপত্তা কর্মীর পদায়ন থাকলেও ডেপুটেশনে তারাও চলে গেছেন অন্যত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ৩ জন মেডিকেল অফিসার ও ৬ জন সহকারী সার্জনসহ ১১পদ শূন্য রয়েছে যেখানে প্রয়োজন ১৪ জন চিকিৎসক।
এছাড়াও এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নেই অফিস সহায়ক,পরিচ্ছন্নতা কর্মী, আয়া, মালী, ওয়াডবয় সহ চতুর্থ শ্রেণীর ১৯ টি পদের কর্মচারী। মাঝে দুই বছর ধরে আউটসোর্সিং এর কর্মী দিয়ে দায় সারলেও মেয়াদ উত্তীর্ণের কারণে তাদেরও কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়ে যায় সেবা প্রত্যাশীরা। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চিকিৎসক ও কর্মচারী শূন্যতায় ভাড়াটিয়া দিয়ে চলছে রোগীদের সেবা দান। প্রায় ২ লক্ষাধিক জনগণের সেবা প্রদানে সীমিত সংখ্যক চিকিৎসককে বেগ পেতে হচ্ছে অপরদিকে সেবা প্রত্যাশীদের পোহাতে ,হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তি।
পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও ওয়ার্ড বয় শূন্যতায় হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় নোংরা থাকছে বলে অভিযোগ রোগিদের।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা শালিখা ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের সোহানা খাতুন নামে এক মহিলা বলেন, পরিছন্নতা কর্মী না থাকায় অনেক সময় হাসপাতালের কিছু জায়গায় নোংরা পড়ে থাকছে সেখানে বসছে ময়লা মাছি ফলে বাড়ছে নতুন রোগের সম্ভাবনা।
শতখালী ইউনিয়ন থেকে সেবা নিতে আসা আক্কাস আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন, এখানে ডাক্তারের সংখ্যা খুবই সীমিত যা কয়েকজন আছে তাদের পক্ষে বিশাল সংখ্যক এ রোগীদেরকে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
হাসপাতালের সুপারভাইজার আলেয়া খাতুন বলেন, দীর্ঘ অনেক বছর ধরে আমাদের হাসপাতালে পরিছন্নতা কর্মী, ওয়ার্ড বয়, মালী, আয়াসহ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী না থাকায় আমাদেরকে বিকল্প ব্যবস্থায় পরিচ্ছন্নতার কাজ সারতে হয় মাঝে মাঝে বাইরে থেকে লোক ভাড়া করে এনেও কাজ চালাতে হয়।
কারণ পরিচ্ছন্নতার কাজ তো সবাই করতে চায় না।
শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আব্বাস উদ্দিন বলেন, আমাদের হসপিটাল থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগীকে সেবা প্রদান করা হয় যার বিপরীতে খুব সীমিত সংখ্যক চিকিৎসক এখানে সেবাদান করছে। আর এই সীমিত সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে বিপুল সংখ্যাক রোগীদের সেবা প্রদানে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। এখানে খুব দ্রুতই কয়েকজন মেডিকেল অফিসার ও সহকারী সার্জন একান্ত প্রয়োজন।
শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাইমুন নেছা বলেন, কয়েক বছর ধরে শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক স্বল্পতা বিরাজ করছে পাশাপাশি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী শূন্যতায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কাজ করতে হচ্ছে এরূপ পরিস্থিতিতে হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধি করতে চাহিদাকৃত জনবল অতীব জরুরী।