গাজীপুরের শ্রীপুরে মনির শাহ নামে এক ভন্ড পীরকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেছেন স্থানীয় তৌহিদী জনতা। মনির শাহকে পুলিশি হেফাজতে আছেন বলে বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে তাকে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়।
মনির শাহ (৪১) সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি ২০০২ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরের বারতোপা গ্রামে শালবনের ভেতর বিশ্ব মানব ধর্ম মেলা নামে আস্তানা গড়ে তুলেছিলেন। সেখানে আস্তানা গড়তে তিনি ধ্বংস করেছেন বনভূমির বিশাল অংশ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২০১৭ সালে তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এরপর আধ্যাত্মিক সাধনার নামে বিতর্কিত কর্মকান্ডে সম্প্রতি আলোচনায় আসেন তিনি।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তৌহিদী জনতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর আগে মাওনা হেরাবনে অস্থায়ী আস্তানা গারে মনির শাহ। সেসময় ধর্মীয় বিতর্কিত কান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।পূনরায় সেখানে ফিরলে সম্প্রতি আলোচনায় থাকা মনির শাহ ও তার অবৈধ আস্থানা ঘিরে কয়েক দিন ধরেই শোরগোল চলছিল। এক পর্যায়ে রোববার সকালে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সমাবেশের ডাক দেয় স্থানীয় তৌহিদী জনতা।
তারা সমাবেশ শুরুর আগেই মনির শাহ শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তার জামিয়া ইসলামিয়া কওমি মাদ্রাসায় আসেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তার আস্তানায় অনুষ্ঠিতব্য ওরশের দাওয়াত দিতে এসেছিলেন তিনি। তার উপস্থিতি মাদ্রাসা ও আশপাশের স্থানীয় জনগণের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ওলামা মাশায়েক ও স্থানীয় জনতা জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে মনির শাহ এর উপর চড়াও হন তারা। খবর পেয়ে ওই মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি জামাল উদ্দিন সহ গণ্যমান্য তৌহিদি জনতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মনির শাহ এর নিরাপত্তা দেন। পরে শ্রীপুর থানা পুলিশকে খবর দিয়ে মনির শাহকে তাদের হাতে তুলে দেন।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, পুলিশ মনির শাহ কে হেফাজতে নেওয়ার পর তাকে গাড়িতে তোলার সময় তৌহিদী জনতা তার উপর হামলা চালায়। গণধোলাই দেওয়া হয় তাকে। এ সময় পুলিশ যথা সম্ভব নিরাপত্তা দিয়ে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়।
জামিয়া ইসলামিয়া কওমি মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি জামাল উদ্দিন বলেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় স্থানীয় ছাত্র জনতা, তৌহিদী জনতা সহ সবাই মনির শাহ এর উপর ক্ষুব্ধ। তাকে দেখতে পেয়ে উত্তেজিত হয়ে মারধরও করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা তার নিরাপত্তা দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।\'
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, স্থানীয় লোকজন মনির শাহ নাম একজনকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা এই ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।\'