আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই বৈঠকের নেতৃত্ব দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “দেশে গণহত্যা, দুর্নীতি, গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা হবে। জনগণ শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ চায়, আমরা সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। সেই লক্ষ্যেই ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।”
প্রথম বৈঠকটি একসঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে সংস্কার কমিশনের ছয়টি প্রতিবেদন।
বিএনপির সঙ্গে সংলাপ ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা
বিএনপির সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, দলটি দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার ওপর জোর দিয়েছে এবং অন্যায়-অত্যাচারের দ্রুত বিচার দাবি করেছে।
তিনি আরও জানান, বিএনপি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এ মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এবং এতে নিরপরাধ কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে— “কোনোভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হবে না।”
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে:
✅ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর বা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
✅ বিএনপি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়।
✅ সরকার নির্বাচন নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে, তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে বিশেষ কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব।
স্থিতিশীলতা ও ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নিয়ে সরকারের বার্তা
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শফিকুল আলম বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার কঠোর বার্তার পর দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। বর্তমানে কোনো ধরনের সহিংসতা নেই, পরিস্থিতি স্বাভাবিক।”
তিনি আরও জানান, বিএনপি দেশের অস্থিরতার জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করেছে, তবে সরকার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর বিষয়ে সরকারের বার্তা:
অভিযানে নিরপরাধ কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্কভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বইমেলায় ভাঙচুরের ঘটনা: দ্রুত তদন্তের নির্দেশ
সব্যসাচী প্রকাশনীর স্টলে ভাঙচুরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব জানান, বাংলা একাডেমিকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “বইমেলা একটি পবিত্র স্থান, আমরা এর পবিত্রতা বজায় রাখতে চাই। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”