মালয়েশিয়া সরকার এমপ্লয়ইজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ) বিদেশি কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক এবং কর্মীর অবদানের হার ১২% থেকে ২%-এ কমিয়ে আনার প্রস্তাব করেছে বলে স্থানীয় সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বিদেশি কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
প্রবাসী কর্মীরা পদ্ধতিগত বৈষম্যের সম্মুখীন হবে বলে তেনাগানিতার নির্বাহী পরিচালক গ্লোরিন দাস মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ বিদেশি কর্মীদের আরও প্রান্তিক করে তুলবে যারা ইতোমধ্যেই পদ্ধতিগত বৈষম্যের সম্মুখীন, যদিও স্থানীয় অর্থনীতিতে তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
তিনি বলেন, এটি কর্মীর জন্য বৈষম্যের ব্যবধানকে আরও প্রশস্ত করবে। যারা ইতোমধ্যেই কম মজুরি, খারাপ কর্মপরিবেশ এবং দুর্বল আইনি সুরক্ষার সঙ্গে লড়াই করছে।
তেনাগানিতার নির্বাহী পরিচালক গ্লোরিন দাস বলেন, ইলেকট্রনিক্স, পাম তেল এবং নির্মাণের মতো শিল্পে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও, তারা এখনও মালয়েশিয়ান কর্মীদের মতো একই সুরক্ষার অধিকারী নয়। এই ব্যাপক কমানোর ফলে বিদেশী কর্মীদের মালয়েশিয়ার প্রবৃদ্ধিতে অপরিহার্য অবদানকারীর পরিবর্তে শ্রম বা পণ্য এবং আর্থিক লাভের উপায় হিসেবে তাদের বিবেচনা করা হয়।
তিনি বলেন, শ্রমিক প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন এবং অভিবাসী অধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা শ্রমিক সুরক্ষা এবং ব্যবসায়িক স্থায়িত্বের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে, নিশ্চিত করবে যে নীতিগুলো কেবল কর্পোরেট স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হবে না।
গত অক্টোবরে ২০২৫ সালের বাজেট উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, সরকার সব বিদেশি কর্মীর জন্য ইপিএফ অবদান বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করেছে, এ পরিকল্পনাটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
বর্তমানে বিদেশি কর্মীরা ৬০ বছরের কম বয়সিদের জন্য ১১% এবং তার বেশি বয়সিদের জন্য ৫.৫% হারে ইপিএফে স্বেচ্ছায় অবদান রাখতে পারেন। উভয় প্রকল্পের অধীনে নিয়োগকর্তারা কেবল ৫ রিঙ্গিত অবদান রাখেন।
৩ ফেব্রুয়ারি আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, সরকার অভিবাসী কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক ২% ইপিএফ অবদান হার বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছে, যা প্রাথমিক প্রস্তাব ১২% এর চেয়ে কম।
পার্টি সোসিয়ালিস মালয়েশিয়া (পিএসএম) কর্মী ব্যুরোপ্রধান এম শিবরঞ্জানি প্রশ্ন তুলেছেন, সরকার কি ইপিএফ অবদান হারের বিষয়ে ঐকমত্য অর্জনের জন্য কর্মচারী, নিয়োগকর্তা এবং সরকারকে সম্পৃক্ত করে ত্রিপক্ষীয় সভার ব্যবস্থা করা দরকার। ইপিএফ অবদান প্রস্তাব কি এ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে, নাকি সরকার শ্রমিকদের মতামত বিবেচনা না করেই কেবল নিয়োগ কর্তাদের স্বার্থের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের কারণে কোনো ব্যবসা বন্ধ হয়নি। এটির (ইপিএফ অবদান) ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হবে বলেও মন্তব্য করেছেন শিবরঞ্জানি।