ঘুস লেনদেন সিন্ডিকেটের ছয় সদস্য চাকরিচ্যুত

প্রকাশিতঃ ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ | ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনসহ অন্যান্য সেবার নামে কোটি কোটি টাকা ঘুস লেনদেন সিন্ডিকেটের ছয় সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে ঘুস লেনদেনের তথ্য প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া আরও কয়েকজনের তথ্য পর্যালোচনা করছে ইসির অধীন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। চাকরিচ্যুত ছয়জন হলেন-আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পের অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. বুলবুল আহমেদ ও মো. সজীব আহমেদ, অফিস সহায়ক মো. নুরুজ্জামাল, মো. জুলফিকার আলী ও সরকার আবুল কালাম পাভেল এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মাহবুবুর রহমান। জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ওই ব্যক্তিরা অনৈতিক কাজের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাদের আর চাকরিতে রাখার সুযোগ নেই। এ কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আরও কিছু তথ্য পর্যালোচনা করছি। পর্যালোচনার পর তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। জানা গেছে, পৃথক দুই চিঠিতে ছয়জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতির কারণ হিসাবে চিঠি দুটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন এবং এসংক্রান্ত বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র সেবার নামে ঘুস লেনদেন নিয়ে ২২ নভেম্বর ‘এনআইডি সেবায় হয়রানি : ঘুস লেনদেনের বিশাল নেটওয়ার্ক ইসিতে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে এই ৬ জনের ঘুস লেনদেনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ছিল। প্রতিবেদনে মো. বুলবুল আহমেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দুই বছর ১০ মাসে বেতন ছাড়াই লেনদেন হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং তার ০১৭২৩....৩৮ বিকাশ নম্বরে এক বছর ১০ মাসে লেনদেন হয়েছে ৩৬ লাখ টাকা। অথচ তার মাসিক বেতন সবমিলিয়ে মাত্র ১৯ হাজার টাকা। তিনি তার নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য কর্মচারী মো. মাহবুবুর রহমানকে ৩ লাখ ১৭ হাজার, সফিকুলকে ১৫ লাখ ৭৩ হাজার, সাইফুজ্জমানকে ১১ লাখ ৩২ হাজার, ইমরানকে ৫ লাখ ৭ হাজার, সজীব হোসেনকে ৪৯ হাজার ৫০৫, নেওয়াজ শরীফকে ১৬ হাজার, জায়দুর রহমানকে ৫৮ হাজার ২০০, সরদার আবুল কালাম পাভেলকে ৭২ হাজার ৯০০ এবং মঈনুল গাজীকে ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৬০ টাকা দিয়েছেন। মো. মাহবুবুর রহমানের ব্যাংক ও বিকাশ অ্যাকাউন্টে অর্ধকোটি টাকা লেনদেনের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল। তার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ৫৫৫৭০....১৭ নম্বর হিসাবে দুই বছরে বেতন ছাড়াই ৩৮ লাখ এবং গত এক বছর ১০ মাসে ০১৭২২....২৩ নম্বর বিকাশ অ্যাকাউন্টে ১২ লাখ টাকা লেনদেন হয়। আর মো. নুরুজ্জামালের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সাত মাসে বেতন ছাড়াই ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫১৯ টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকে দুই বছরে ১০ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩৪ টাকা এবং বিকাশ হিসাবে ৭-৮ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। একইভাবে অন্যদের অস্বাভাবিক লেনদনের তথ্য প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনে অভিযান চালায় দুদকের একটি প্রতিনিধিদল। তারাও অভিযানে এনআইডি সেবার নামে ঘুস লেনদেনের তথ্য পান।