নিলাম থেকে একজন অধিনায়ক খুঁজছিল পাঞ্জাব কিংস। গত মৌসুমের শিরোপাজয়ী অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের দিকে নজর পড়া তাই খুবই স্বাভাবিক ছিল তাদের। তাকে ঘিরে ব্যক্তিগত আগ্রহও ছিল পাঞ্জাবের কোচ রিকি পন্টিংয়ের। আগে আরেকটি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই যে কোনো মূল্যে তাকে দলে পেতে মুখিয়ে ছিলেন কোচ রিকি পন্টিং। সব কিছু মিলিয়েই নিলামে তরতরিয়ে বেড়েছে শ্রেয়াসের দাম। তবে পন্টিং তৃপ্ত, মনের মতো একজনকে পেয়েছেন তিনি।
এবারের নিলামে ২৬ বছর বয়সি এ ব্যাটসম্যানকে ২৬ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে দলে নেয় পাঞ্জাব। ঋশভ পান্তের ২৭ কোটি রুপির পর তিনিই আইপিএল নিলামের ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার।
গত আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। এরপর কলকাতা তাকে ধরে রাখবে বলেই অনুমিত ছিল। কিন্তু পারিশ্রমিক নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় নিলামের টেবিলে চলে আসেন তিনি। তাকে নিয়ে কাড়াকাড়ি আর পারিশ্রমিকের চড়া অঙ্ক তাই অনুমিতই ছিল। তার পরও অঙ্কটা এত বিশাল যে, তা চোখ ধাঁধিয়ে দেয় অনেকেরই।
তবে পন্টিংয়ের কাছে টাকার অঙ্ক এখানে কোনো মুখ্য ব্যাপারই নয়। মৌসুম শুরুর আগে পাঞ্জাব কোচ ব্যাখ্যা করলেন শ্রেয়াসকে দলে পেতে উঠেপড়ে লাগার কারণ। তিনি বলেন, এবারের নিলামে যদি পেছন ফিরে তাকান, তা হলে এটি মোটামুটি সবার কাছেই পরিষ্কার ছিল যে— কাকে আমি অধিনায়ক হিসেবে চাই। এবং আমাদের চাওয়া পূরণ হয়েছে। শ্রেয়াসের সঙ্গে আবার কাজ করতে মরিয়া ছিলাম আমি। দিল্লিতে লম্বা সময় ধরে দারুণ কাজের সম্পর্ক ছিল আমাদের। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাদের মধ্যে সেরাদের একজন সে। মানুষ হিসেবে সে দারুণ। আইপিএলজয়ী অধিনায়ক। এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার থাকতে পারে না।
রিকি পন্টিং বলেন, সম্ভাব্য সেরা নেতাকেই আমরা নিজেদের দলে পেয়েছি। একসঙ্গে দারুণ সময় কেটেছে আমাদের, এসেছে সাফল্য। আমার মনে হয়, পরস্পরকে খুব ভালো বুঝতে পারি আমরা। আপনারা তো জানেনই, যে কোনো দলেই কোচ-অধিনায়কের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দুজনের সম্পর্ক খুবই ভালো এবং শক্তিশালী।
এদিকে শ্রেয়াস নিজেও দারুণ রোমাঞ্চিত পন্টিংকে কোচ হিসেবে পেয়ে। দিল্লির স্মৃতি মনে করেই পাঞ্জাবের অধিনায়ক বলেন, আবার একসঙ্গে কাজ করতে তার তর সইছে না। তিনি বলেন, অন্য এক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে তার সঙ্গে প্রায় তিন বছর কাজ করেছি। মাঠের ভেতরে-বাইরে প্রতি ক্রিকেটারকে নিয়ে তিনি কীভাবে ভাবেন, তা আমি জানি। সবার পাশে সমানভাবে থাকেন তিনি।
শ্রেয়াস বলেন, অনেক দলেই দেখা যায় সিনিয়র-জুনিয়র সংস্কৃতি আছে। কিন্তু আমি যখন তার সঙ্গে প্রথমবার কাজ করি, আমাকে তিনি এই অনুভূতি দিয়েছিলেন যে, আমি দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার এবং এই সংস্করণে সহজেই নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে পারি। আমাকে যে আত্মবিশ্বাস তিনি জুগিয়েছেন, অন্য পর্যায়ের তা।
আইপিএলের শুরু থেকে প্রতিবার নতুন আশায় মাঠে নামলেও কখনো শিরোপা জয়ের স্বাদ পায়নি পাঞ্জাব। এবার পন্টিং-শ্রেয়াস জুটিকে ঘিরে অধরা ট্রফি ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছে দলটি।
উল্লেখ্য, ২০১৫ থেকে ২০২১— আইপিএল ক্যারিয়ারের শুরুর সাত মৌসুম দিল্লি ক্যাপিটালসে ছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। এর মধ্যে ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ মৌসুমে সেখানে কোচ হিসেবে পান পন্টিংকে। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তির কোচিংয়ে প্রথম দুই মৌসুমে ৪৬৩ ও ৫১৯ রান করেন শ্রেয়াস, এখনো যা ব্যাট হাতে তার আইপিএল ক্যারিয়ারের সেরা দুই মৌসুম।