পারমাণবিক ইস্যুতে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র উভয়কে সামলেই এগোচ্ছে ইরান

প্রকাশিতঃ এপ্রিল ১৪, ২০২৫ | ১০:২৮ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এ সপ্তাহেই মস্কো সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তার এ সফরের মূল লক্ষ্য হলো—ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনার বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পরামর্শ করা। সোমবার তেহরানে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাগাই সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘এই সফর পূর্ব-পরিকল্পিত হলেও আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পরমাণু ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে।’ খবর আল-জাজিরার। এর আগে, গত শুক্রবার ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একটি প্রাথমিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে হওয়া আলোচনাকে দুই পক্ষই ‘গঠনমূলক’ ও ‘ইতিবাচক’ বলে উল্লেখ করেছে। এখন উভয় পক্ষ আগামী শনিবার আবার বসতে সম্মত হয়েছে। তবে ইতালির রাজধানী রোম আসন্ন এই বৈঠকের সম্ভাব্য ভেন্যু হতে পারে বলে জানা গেছে। ইরান জোর দিয়ে বলেছে, আলোচনা কেবল পারমাণবিক কার্যক্রম ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ওপর সীমাবদ্ধ থাকবে। তারা অন্য কোনো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবে না। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা বলে অভিযুক্ত করে আসছে। যদিও তেহরান বরাবরই তাদের এ অভিযোগ অস্বীকার ও দাবি করে আসছে যে, এটি শুধু শান্তিপূর্ণ, বেসামরিক উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে রাশিয়া ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির (JCPOA) অন্যতম স্বাক্ষরকারী ছিল। দেশটি আবারও এই ইস্যুতে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চাইছে। একইভাবে চীনও ওমান বৈঠকের আগে আলোচনায় যুক্ত ছিল। ইউরোপীয় প্রতিক্রিয়া তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্ররা, যারা ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক উপেক্ষিত বোধ করছে, তারা এবার চলমান ইরান ইস্যুতেও পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারো বলছেন, আমরা ব্রিটিশ ও জার্মান মিত্রদের সঙ্গে সতর্ক দৃষ্টিতে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করব, যাতে এই আলোচনা আমাদের নিরাপত্তা স্বার্থকে উপেক্ষা না করে। আইএইএ প্রধানের সফর এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বুধবার (১৬ এপ্রিল) তেহরান সফরে যাচ্ছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানসহ দেশটির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। গ্রোসি বলেন, এ সময়ে কূটনৈতিক সমাধান খুবই জরুরি। তাই ইরানের সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখা প্রয়োজন। আইএইএ-এর ফেব্রুয়ারি মাসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান বর্তমানে ৬০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রায় ২৭৪.৮ কেজি মজুদ রেখেছে—যা ৯০% হলে তা অস্ত্র তৈরির উপযোগী হয়ে যায়। এ নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আলোচনাগুলো ‘ঠিকঠাক চলছে’। সেইসঙ্গে তিনি আশা করছেন, পারমাণবিক ইস্যুতে শীঘ্রই একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।