স্বচ্ছ-জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ গড়তে কাজ করবে ফোরাম জোট

প্রকাশিতঃ মে ১১, ২০২৫ | ১০:৩০ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

নির্বাচনে বিজয়ী হলে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ গড়ে তুলতে কাজ করবে ফোরাম জোট। একইসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের পাল্টা শুল্ক এবং এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধমে টেকসই পোশাক খাত গঠনে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৯ দফা অগ্রাধিকার নিয়ে কাজ করবে তারা। রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ফোরাম নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু। এ সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন ফোরাম নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে ফোরাম মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী, প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফয়সাল সামাদসহ প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ৪৫ বছরের বেশি সময়ের যাত্রায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত এখনো টেকসই হয়ে ওঠেনি। বিজিএমইএর যতটা শক্তিশালী ভূমিকা রাখার কথা সেটি বিগত দিনে হয়নি। উল্টো একটি গোষ্ঠী সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে। কিন্তু উদ্যোক্তা, মালিকরা সব সময়, একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ চেয়েছেন। তিনি বলেন, এবার একটি গ্রহণযোগ্য ভোটার তালিকা পাওয়া গেছে। ফলে, সাধারণ সদস্যরা আশা করছেন, সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমরা মনে করি এবার মালিকদের আশার প্রতিফলন হবে। তিনি আরও বলেন, অনেকে নির্বাচনে আগে মালিক-উদ্যোক্তাদের কাছে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। কিন্তু নির্বাচনের পর তা ভুলে যান অনেকে। ফোরাম থেকে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে, তা বাস্তবায়ন করা হবে। সদস্যদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তদারকি করার জন্য প্রতিজন নির্বাচিত পরিচালক ৫০-৭০টি কারখানার দায়িত্বে থাকবেন। অনেকটা ব্যাংক বা বহুজাতিক কোম্পানির রিলেশনশিপ ম্যানেজারের মতো। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী হলেই যে তাকে নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখতে হবে, এই ধরনের কোন নিয়ম এ দেশে নাই। কিন্তু অতীতে এমন করা হয়েছিল। ফোরাম যে ৩৫ জন প্রার্থী দিয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মী নেই। এটা আমি জোর দিয়ে বলতে পারি। কারণ আমি এখানে নতুন প্রজন্মকে সামনে আনতে চাই। ব্যবসা রয়েছে এমন উদ্যোক্তা, দক্ষ-অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ও তারুণ্য আর প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন দূরদর্শিতা বিবেচনা করে প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি ফোরাম প্রার্থীরা পর্ষদে এলে বিজিএমইএ আরও আধুনিক ও জবাবদিহিমূলক হয়ে উঠবে এবং হারানো ঐতিহ্য- সুনাম ফিরে আসবে। ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বাবু বলেন, অতীতে অনেক সদস্য ভোটার হওয়ার মানদণ্ড পূরণ করতে না পারলেও তাদের ভোটার করা হয়েছে। ইচ্ছে করেই হয়তো সেটা করা হয়েছে। এবার আমাদের প্রধান এজেন্ডা ছিল ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করা। এক্ষেত্রে অনেকাংশেই সফল হয়েছি। শতাংশের হিসাবে বলতে গেলে ৯০ শতাংশ সফল বলা যেতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে যারা অংশ নিচ্ছে তারা সবাই যোগ্য। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল সদস্যরাও যোগ্য। তবে আমাদের প্যানেলের প্রার্থীরা ‘যোগ্যতর’। বিজিএমইএর ইতিহাসে আমাদের প্রতিপক্ষ প্যানেল বেশিরভাগ সময় ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু ওনারা কোনো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারেন নাই। আমরা একটা জিনিস দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমরা বিজিএমইএ নির্বাচন করছি না। সদস্যদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে, তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে নির্বাচন করছি। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতিরা পলাতক কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ হাসান খান বলেন, বিজিএমইএর কোন সভাপতি পলাতক নেই। যিনি পলাতক বা যিনি জেলে আছেন তার রাজনৈতিক পরিচয় এবং কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি জেলে আছেন অথবা জীবনের নিরাপত্তার জন্য পালিয়ে আছেন। এতে প্রমাণিত হয় না যে উনি দোষী। বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী বলা যাবে না। যমুনা গ্রুপের পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, আমি বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে কাজ করব। এটিই এখন পোশাক খাতের বড় সমস্যা বলে আমার মনে হয়। অর্ডার ছুটে যাওয়ার ভয়ে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা বিদেশি বায়ারদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করতে সংকোচ বোধ করে। বাংলাদেশ সস্তায় তৈরি পোশাক উৎপাদনের একক গন্তব্য বিধায় বিদেশি ক্রেতাদের বাংলাদেশে আসতেই হবে। ফোরাম মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী বলেন, অত্যন্ত যাচাই-বাছাই করে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রার্থী নির্বাচন করেছে ফোরাম। এই জোটের সব প্রার্থী ব্যবসা বোঝে, সুশিক্ষিত এবং তরুণ। ফোরাম জয়ী হলে বাংলাদেশে পোশাক শিল্প দৈন্যদশা কাটিয়ে উঠে ভবিষ্যতে সুশৃঙ্খল বিজিএমইএ উপহার দিতে সক্ষম হব।