মিলানকে হারিয়ে ৫১ বছর পর শিরোপা জিতল বোলোনিয়া

প্রকাশিতঃ মে ১৫, ২০২৫ | ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

বুধবার রাতে রোমের অলিম্পিকো স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ল বোলোনিয়া। ইতালিয়ান কাপ ফাইনালে তারা ১-০ গোলে হারিয়ে দিল এসি মিলানকে। এই জয়ে বোলোনিয়া ৫১ বছর পর জিতল কোনো বড় শিরোপা। শেষবার তারা এই ট্রফি জিতেছিল ১৯৭৪ সালে। একমাত্র গোলটি করেন ড্যান এনডোয়ে। ম্যাচের ৫৩তম মিনিটে তিনি মিলানের রক্ষণ ভেদ করে দুর্দান্ত শটে বল জালে পাঠান। এর আগ পর্যন্ত ম্যাচটিতে দুই দলি লড়াই করেছে দাঁতে দাঁত চেপে। এনডোয়ের গোলের পর বোলোনিয়া জমাট রক্ষণের পসরা সাজিয়ে বসে, এই দুর্ভেদ্য দুর্গ আর ভাঙা হয়নি মিলানের। এই শিরোপা বোলোনিয়ার ইতিহাসে বিশেষ জায়গা করে নেবে। ১৯৭৪ সালে শেষবার ইতালিয়ান লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি। এরপর এত বছর বড় কোনো ফাইনালেই উঠতে পারেনি তারা। এবার কাপ ফাইনালে উঠে এসেই বাজিমাত করল। বোলোনিয়ার কোচ ভিনচেনজো ইতালিয়ানো এই জয়ের মাধ্যমে তার কোচিং ক্যারিয়ারের প্রথম বড় ট্রফি জিতলেন। এর আগে তিনি ফিওরেন্তিনার কোচ হিসেবে তিনটি ফাইনাল হেরেছিলেন, যার মধ্যে ছিল গত বছরের ইতালিয়ান কাপ ফাইনালও। ম্যাচ শেষে উল্লসিত খেলোয়াড়েরা কোচ ইতালিয়ানোকে কাঁধে তুলে নেন। গ্যালারিতে তখন আনন্দ-অশ্রুতে ভেসে যাচ্ছিল বোলোনিয়া সমর্থকরা। বহু সমর্থক ছিলেন সেখানে, যারা মনে করেছিলেন জীবদ্দশায় আর এমন কোনো শিরোপা দেখবেন না! তবে বোলোনিয়া তাদের ভুল প্রমাণ করে ছাড়ল আজ! অন্যদিকে মিলানের জন্য এটি ছিল আরও একটি হতাশাজনক রাত। ২০০৩ সালে তারা সর্বশেষ ইতালিয়ান কাপ জিতেছিল। সে বছরই তারা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। কিন্তু এবার সবদিক থেকেই দুর্দশায় দিন কাটছে তাদের। সিরি আ-তেও পিছিয়ে আছে তারা, আর এই হারে কাপ জয়ের স্বপ্নও ভেঙে গেল। ম্যাচের শুরুর দিকে সুযোগ পেয়েছিল দুই দলই। অষ্টম মিনিটে বোলোনিয়ার সান্তিয়াগো কাস্ত্রো একটি দুর্দান্ত ফ্রি কিক থেকে গোলের সুযোগ পান, তবে মিলানের গোলকিপার মাইক মিয়াঁ তা ঠেকিয়ে দেন। পরে বোলোনিয়ার ডিফেন্ডার বেউকেমা ভুল করে নিজের গোলকিপারের দিকে বল ঠেলে দেন, কিন্তু ভাগ্যক্রমে মিলানের লুকা ইয়োভিচ সেই বল সরাসরি স্কোরুপস্কির গায়ে মারেন। ম্যাচের পরে অংশে দুই দলই কিছুটা সতর্ক হয়ে খেলছিল। তবে ৫৩ মিনিটে রিকার্ডো ওরসোলিনি বল নিয়ে বক্সে ঢোকার সময় থিও এর্নান্দেজ ট্যাকল করেন। কিন্তু বল পেয়ে যান এনডোয়ে। তিনি দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জোরালো শটে গোল করে ইতিহাস রচনা করেন। এরপর মিলান চেষ্টা করলেও আর কোনো বড় সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ৭১ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় সান্তিয়াগো হিমেনেজ একটি বড় সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু তার দুর্বল প্রথম টাচে বল স্কোরুপস্কির হাতে চলে যায়। শেষদিকে বোলোনিয়া রক্ষণে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠে লুটিয়ে পড়ে আনন্দে। এই জয় শুধু একটি কাপ জয় নয়, এটি একটি শহরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। দিনটাকে নিশ্চয়ই বোলোনিয়া তাদের ফুটবল ইতিহাসে লিখে রাখবে সোনার হরফে!